18upchoti !

Enjoy daily new desi sex stories at 18upchoti erotic literature forum. Also by creating an account here you will get exclusive access to features such as posting, discussion, & more. Feel free to sign up today!

Register For Free!
  • Activate dark mode by clicking at the top bar. Get more features + early access to new stories, create an account.

বাংলা চটি গল্প কিছু না বলা কথাঃ দেহরক্ষী (সমস্ত পর্ব) (ongoing)

  • Thread Author

পর্ব ১ - Part 1​

প্রতি মানুষের জীবনেই থাকে নিজস্ব কিছু অনুভূতি, কিছু কথামালা, যেগুলো কখনো শব্দে ধরা দেয় না; কিন্তু সেগুলো থেকে যায় হৃদয়ের অতল গভীরে, নীরব ভঙ্গীতে। মানুষের জীবনের সবচেয়ে গভীর অনুভূতিগুলো যেগুলো কথায় প্রকাশ না পেয়ে কেবল হৃদয়ের গহীনে দোলা দিয়ে যায়; আর সঙ্গে অবলকন হাসি, বা চোখের জল, যার সবটাই থেকে যায় নীরবে। আমার এই গল্পসিরিজে সে সব গোপন কথা, যা তথাকথিত সভ্য সমাজের বেড়াজালে বাঁধা পড়ে থাকে চিরকাল, কিন্তু প্রতিধ্বনিত হয় প্রতিটি নিঃশ্বাসে প্রতিনিয়ত।

“কিছু না বলা কথাঃ” হলো সেই সকল সম্পর্কের গল্প, যা কেবল অনুভবের মধ্যেই বেঁচে থাকে। এমন কিছু কথা, যা সময়ের স্রোতে হারিয়ে যায়, কিন্তু হৃদয়ে থেকে যায় চিরকাল। সময়ের পরিক্রমায় সেই সম্পর্কগুলো কেমন থাকে? কী হয় যখন কেউ কথা বলার সুযোগ পায় না?
এই গল্প সেই অনুভূতিগুলোর, যেখানে নীরবতাই সব কথা বলে দেয়। নীরবতার গভীরে যে আবেগ লুকিয়ে থাকে, সেই গল্প বলার চেষ্টা এই “কিছু না বলা কথাঃ”।

নমস্কার বন্ধুরা এখানে আমি, আপনাদের প্রিয় লেখিকা স্নেহা মুখার্জি; রয়েছি সেই সকল নতুন গল্পের সিরিজ নিয়ে। যেখানে প্রতিটি অধ্যায় হবে এক একটি অনুভূতির ক্যানভাস, যা অনেকে না বলা কথার সাক্ষী হয়ে থাকবে। যেখানে বিভিন্ন ব্যক্তি প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে তুলে ধরবে নিজেদের জীবনের না বলা কথা, যেগুলো হয়তো লজ্জা কিংবা ভয়ে অথবা অন্য কোন কারণে এতদিন কাওকে বলে ওঠা হয়নি তাঁদের পক্ষে।

তবে শুরুতেই বলে রাখি গল্পে বক্তাদের সুরক্ষার খাতিরে তাঁদের নাম, ঠিকানা এবং আরও জাবতিও জরুরী তথ্য সংক্রান্ত বিষয় পরিবর্তিত রাখা হল। এছাড়াও আমার কাজ সে সকল বক্তাদের কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরা, তাঁদের কথার সত্যতা জাচাই করা নয়। তাই কোন ঘটনার সাথে মিল পেয়ে থাকলে টিভির বিজ্ঞাপনের ন্যায়ে এটাও নিতান্ত অনিচ্ছুক ও কাকতালীয় ঘটনা ভেবে উড়িয়ে দেওয়ার অনুরোধ রইল। এবার তবে আর সময় নষ্ট না করে শুরু করা যাক গল্প ~দেহরক্ষী~

~“আপনার প্রথম কাজের অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে আপনাকে মিস আহেলি সান্যালের সাময়িক দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে মিস আহেলি সান্যাল তাঁর জীবনের প্রথম সিনেমার শুটিং এর জন্য বিদেশ সফরে যাচ্ছেন, তাই আপনার কর্তব্য হবে সবসময় তার সাথে থেকে তাকে সুরক্ষা প্রদান করা। এর সাথে এটাও খেয়াল রাখা যাতে আপনার কোন কাজে মিস আহেলি সান্যাল কোনো রকম অসংলগ্ন কিংবা বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন না হন। প্রয়োজনে মিস আহেলিকে খুশি রাখতে যদি আপনাকে কোন অতিরিক্ত কাজ করার প্রয়োজন হয়, তবে দপ্তরের রেপুটেশনের কথা মাথায় রেখে আপনাকে তা করতে হবে। সর্বোপরি, ২৫’শে জুন সকাল বারটার মধ্যে আপনাকে উল্লেখিত জায়গায় পৌছে যেতে হবে।”~

সকাল সকাল এমন একটি ম্যাসেজ পেয়ে গরম বিছানা ছেড়ে উঠে পরে রক্তিম। ম্যাসেজটি একটি প্রাইভেট নম্বর থেকে এসেছে। পপ্‌আপ চার্টের সাথে তাঁর মোবাইলের ট্রু-কলারটি ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে নম্বরটি তাঁর বসের। এ বিষয়ে যদিওবা ২ দিন আগেই কথা হয়ে গিয়েছে তার দপ্তরের সাথে, তবুও আজ যেন পুনরায় ম্যাসেজ করে বেশ পার্সোনাল ভাবেই জানিয়ে দিল তার বস।

একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে মোবাইলের ব্যাক বাটানটি প্রেস করতেই পুরো স্ক্রিনজুড়ে ফুটে ওঠে একটি সুন্দরী মেয়ের ছবি। মোবাইলের সেই ওয়ালপেপারটির ওপর একবার চুম্বন করে বিছানা ছেড়ে উঠে পরে রক্তিম। এরপর প্রত্যেক দিনের অভ্যাস মত নিজের মাথার বালিশ বিছানার একপাশে গুছিয়ে রেখে পাশ বালিশটি সরাতেই তাঁর চোখ চলে যায় সেই বালিশের মাঝের অংশটায়। গরম সাদা পাশবালিশের সে অংশে হাত দিয়ে সামান্য মুচকি হাসে রক্তিম। এরপর সেটি বিছানার নির্দিষ্ট অংশে গুছিয়ে রাখে ডান পাশে ঘুরতেই তাঁর চোখ গিয়ে পড়ে টেবিলের ওপর থাকা অ্যালার্ম ক্লকটির দিকে। রক্তিম দেখে ঘড়ির অসম কাঁটা দুটি যেন দু’দিকে হাত মেলে জানাতে চাইছে যে তাঁর হাতে খুব একটি বেশী সময় নেই।

ঘড়িটির দিকে তাকিয়ে রক্তিমের দু’ভ্রূর মাঝে ভাজ সৃষ্টি হয়। তাঁর পরিষ্কার মনে আছে প্রতিদিনের মতন কাল রাতেও সেই ঘড়িটিতে অ্যালার্ম সেট করে শুয়েছিল। তবে কি ঘড়িটি খারাপ হয়েছে? ব্যাটারি যে শেষ হয়েছে, তাও নয়; কারণ ঘড়িটি এখনও দিব্যি চলছে। তবে!!!… এরপর ঘড়িটির বিশ্বাস ঘাতকতার কারণ বিষয়ে আর বেশী ভাবতে পারে না রক্তিম। আজকের মতন গুরুত্বপূর্ণ দিনের জন্য শুধুমাত্র একটি চাইনিস অ্যালার্ম ক্লকের ওপর ভরসা করার ফল বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারে সে। তাই সে এবার তাড়াতাড়ি বেসিনের কাছে গিয়ে কোনো মতে নিজের হাতমুখ ধুয়ে নেয়। এরপর আলনা থেকে টাওয়ালটিকে কাঁধে জরিয়ে অতি দ্রুতটার সাথে প্রবেশ করে বাথরুমের ভেতর। বাথরুমে ঢুকেই এরপর টাওয়ালটিকে দেওয়ালের আংটাটিতে ঝুলিয়ে শাওয়ারের হাতলটি ঘোরায় এবং ঘোরানোর সঙ্গে সঙ্গে তীব্র বেগে ঝর্নার উষ্ণ গরম জল এসে ধাক্কা মারে রক্তিমের সমগ্র মুখ ও নগ্ন শরীরের ওপরে।

তবে গল্পটি এর আগে চালিয়ে যাওয়ার পূর্বে এই গল্পের নায়কের অতীত ও চারিত্রিক কিছু বর্ণনা দেওয়া যাক। গল্পের নায়ক অর্থাৎ রক্তিম হচ্ছে ঊনতিরিশ বছরের একটি বাঙালী যুবক। লম্বায় সে প্রায় ছয় ফুট’ পাঁচ ইঞ্চির’ সমান, গায়ের রঙ শ্যামলা এবং মুখশ্রীও অতি সাধারণ। তবে মুখশ্রী সাধারণ হলেও শারীরিক গঠনে যেন তাঁর জুড়ি মেলা ভার। উপরন্তু শ্যামবর্ণের এই পেশীবহুল ভারতীও যুবকটির শারীরিক গঠন দেখলে যেন যে কোন মেয়েই এক নজরে তাঁর প্রেমে পরে যেতে বাধ্য।

সুঠাম শরীর, ৪৬ ইঞ্চির বুক এবং পেটে সামান্য মেধ থাকলেও তার ওপর দিয়ে সিক্স প্যাক যেটি প্রতিটি মেয়েদের কাছে সেক্সি প্যাক হিসেবেই বিবেচ্য, তা যেন বেশ ভালভাবেই বোঝা যায়। এছাড়াও তার শরীরের দু’পাশে রয়েছে বেশ নজর কাড়া পেশীবহুল বাহুদ্বয় যার বেষ্টনীতে যে কোনো বয়সী নারী আবদ্ধ থাকতে যেন সর্বদা প্রস্তুত। ৮৪.৬ কেজির ওজনের এই বডিবিল্ডারের মত দেখতে যুবকটিকে সৃজনের দায়ভার বোধয় বিধাতা কোন রমণীর হাতে তুলে দিয়েছিল। এবং সেই রমণীই বোধয় নিজের রমনকালে মনের সমস্ত সুপ্ত কামনা-বাসনা পূরণ করতে নিপুণ হস্তে বানিয়েছিল এই যুবকটিকে। এবং এই কথাটি যে কতটা যথার্থ সেটি আরও ভাল করে বোঝা যায় তার নিম্নাঙ্গটি দেখলে।

রক্তিমের পেশীবহুল দু’ পায়ের মাঝে থাকা তাঁর বিশাল কালো কাম দণ্ডটিকে দেখলে যেন যে কোন নারীরই রাতের ঘুম উড়ে যেতে বাধ্য। তার কালো কামদণ্ডটি স্বাভাবিক অবস্থাতেই প্রায় ৬.৫’’ ইঞ্চি লম্বা আর ৫’’ ইঞ্চি প্রস্থ; যেটি ফণা তুলে উঠলে গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৮ ইঞ্চির কাছে। আবার কখনো কখনো তাঁর উত্তেজনা খুব বেশী হলে সেই পুরুষাঙ্গটিই যেন রগ সুদ্ধ ফুলে ফেঁপে উঠে ছুঁয়ে ফেলে স্কেলের ৯’ ইঞ্চি দীর্ঘ এবং ৬.৪’’ ইঞ্চি প্রস্থের ঘর; তবে সেটি তখনই সম্ভব যদি ফণা তোলার রমণীটি হয় আহেলি সান্যালের মত কোন কামিনী।

এছাড়াও তার সেই সুবিশাল দণ্ডের নিচে আছে প্রায় দুটি আস্ত হাঁসের ডিমের মত অণ্ডকোষ। যেটি দেখলে স্পষ্টই বোঝা যাবে যে সেগুলি সাধারণ পুরুষদের চেয়ে বেশ অনেকটাই বীর্যরস তৈরিতে সক্ষম। একবার হস্তমৈথুনে সে যেন প্রায় ৯ মিলিলিটার পর্যন্ত বীর্য উগড়ে দিতে পারে অতি অনায়াসেই। এদিকে সে নিজের শরীরের প্রতি এতটাই যত্নশীল যে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিন করে নিজের দাড়ি কাঁটার পাশাপাশি সে সযত্নে পরিস্কার করে নিজের বুক, বগল এবং নিম্নাঙ্গের চুলগুলি। তবে ত্রিম না, একেবারে ক্লিন শেভ যাকে বলে। এছাড়াও নিজের পেশীবহুল শরীরের সুঠামতা বজিয়ে রাখতে কাজের পাশাপাশি তাঁর প্রতিদিন নিয়ম করে জিমে যাওয়া তো রয়েছেই।

এবার আমরা চলে আসি রক্তিমের স্বভাবের দিকে। রক্তিমের স্বভাব বিচার করতে গেলে আমাদের তার বিশিষ্টের দুটি দিক পরিলক্ষিত হবে; প্রথমত, সে কাজের দিক থেকে খুবই কঠোর ও পেশাদারি। নিজের কাজের মাঝে সে কখনই কোন কিছুকে স্থান দেয় না। এবং এই কারনেই বোধয় কোন নারীর সান্নিধ্যে আসার সৌভাগ্য আজ পর্যন্ত হয়ে উঠেনি তাঁর। ফলত এতো সুন্দর দৈহিক গঠন থাকা সত্ত্বেও রক্তিম যেন আজও প্রেমের বিষয়ে বেশ অনভিজ্ঞ।

এদিকে যদিওবা সে বিষয়ে তাঁর কোন আক্ষেপও নেই বলা চলে। কারণ সে নিজের থেকে না হলেও বহুবারই বহু মেয়ে দ্বারা প্রেমের প্রস্তাব পেয়েছিল। তাঁরা প্রত্যেকেই যেন তাঁর আর্থিক দুরবস্থার কথা মাথায় রেখেই এক বাক্যে ছুটে এসেছিল তাঁর কাছে। তবে রক্তিম তাঁদের প্রত্যেকেই পরিষ্কার করে দিয়েছিল যে সে এখন কোন প্রকার সম্পর্কে জড়াতে ইচ্ছুক নয়। এদিকে তাঁর সেই মেয়েদের প্রতি কাঠিন্য ভাব উলটো আরও সে সব মেয়েদের মনে তাঁর প্রতি কৌতূহলকে উস্কে দিত।

তবে রক্তিমের এই কঠিন ব্যক্তিত্বের একটি ব্যতিক্রমী দিকও আছে, যেটি তার চারিত্রিক স্বভাবের দ্বিতীয় বিশিষ্ট হিসেবে তুলে ধরে। সেটি হল রক্তিম কখনও কোন নাড়ীর প্রতি আকৃষ্ট না হয়ে থাকলে জীবনে যেন একটি নাড়ীর সৌন্দর্যকে সে একেবারেই উপেক্ষা করতে পারে নি। তবে কেন পারিনি তাঁর উত্তর যেন রক্তিম নিজেও ঠিকঠাক জানে না। এবং তার জীবনে নারী বলতে দুর্বলতা সেই শুধু একজনের ওপরই, আর সে হল সম্প্রতিকালে উদীয়মান বিখ্যাত তারকা মিস আহেলি সান্যাল। তার বীরভুমের পৈতৃক জমি বিক্রি করে কাজের সন্ধানে এই মুম্বাইতে আসার অন্যতম কারণটাই হল সেই তারকা।

তবে রক্তিম যে শুধু আহেলির ওপর মোহগ্রস্থ তা নয় বরং সে তাঁর প্রতি যৌন আকৃষ্ট বটে। এবং তাই তো সে প্রতি রাতে মুম্বাইয়ের পুরনো ফ্ল্যাটটাতে নগ্ন হয়ে শুয়ে সেই উনিশ বছর বয়সী আহেলি সান্যালের নির্বস্ত্র কাল্পনিক শরীরটিকে কল্পনা করে নিজের শরীরের মাঝে। এবং পাশবালিশকে বুকে টেনে টানা ২২ মিনিট হস্তমৈথুনের পর নিজের স্বপ্নের মধুতে প্রচুর পরিমাণে ঝাঁজাল ঘন বীর্য মেশানোর মাধ্যমে তাঁর বাসনা পূরণ করে। গত রাত্রিও অবশ্য তাঁর পরিবর্তন ঘটে নি এবং তাই সে আজ সকালে সাদা বালিশের সেই ভেজা চটচটে অংশে হাত দিয়ে মৃদু হেসেছিল। রক্তিমের এই অভ্যাসের ইন্ধন যদিওবা জগিয়েছিল আহেলি নিজেই। আহেলির নিজের পেজে অমন বিকিনি পরিহিত ছবি আর সঙ্গে বিভিন্ন সেক্সি সেক্সি পোশাক পরিহিত রক্ত গরম করা ছবি না ছাড়লে হয়ত রক্তিম তাঁর প্রতি এমন যৌন আবিষ্ট হয়ে পরত না।

এবার তবে পুনরায় গল্পে ফিরে আসা যাক; পুরো শরীরটিকে শাওয়ারের জলে ভিজিয়ে রক্তিম এবার সামনের ট্রে থেকে একটি সাবান তুলে নেয় এবং ডান হাত দিয়ে পুরো শরীরে বলাতে শুরু করে। পুরো শরীরটিকে সাবানের ফেনায় ভরিয়ে তুলে এরপর সে তাঁর হাতটি নিয়ে যায় নিজের নিম্নাঙ্গের কাছে। শীতল সুগন্ধি সাবানটি তাঁর ধনে স্পর্শ হতেই যেন একটি তীব্র শিহরণ খেলে যায় রক্তিমের সমগ্র পিঠ জুড়ে। তাঁর মাথায় যে এখন আহেলি ঘরাঘরি করছে তা আর বলার অবকাশ রাখে না। এদিকে তাঁর ধনটিও ইতিমধ্যে বৃহদাকার ধারণ করে যেন প্রস্তুত হয়ে উঠেছে তাঁর স্বপ্নের সুন্দরীকে ছোবল মারার জন্যে। তবে এখন আর এসবের জন্য তাঁর হাতে সময় নেই। এবং তাই সে এবার তাঁর কালো বাঁড়ার লাল টকটকে মুণ্ডিটিতে কিছুটা ফেনা লাগিয়ে আহেলির কমল হাতের তালু কল্পনা করে অণ্ডকোষ সহ কিছুক্ষণ সেটিকে ডোলে অবশেষে ধুয়ে নেয়। এরপর শরীরের সমস্ত ফেনা শাওয়ারের জলে ধুয়ে নিয়ে স্নান শেষ করে শুকনো তাওয়াল দিয়ে নিজের গা মুছতে মুছতে বের হয় বাথরুম থেকে।

চলবে…

লেখিকা- স্নেহা মুখার্জি
 
Administrator
Staff member
Joined
Mar 16, 2024
Messages
1,176

পর্ব ২ - Part 2​

সকাল প্রায় সাড়ে দশটা নাগাদ রক্তিম তাঁর পেশাদারী কালো সুটটি পরে ফ্ল্যাটের দরজায় চাবি দিয়ে বেরিয়ে আসে। সঙ্গে হাতে তাঁর একটি জামাকাপড়ের লাগেজ ব্যাগ ও একটি কালো সুটকেস। ব্যাগ হাতে চার তলা সিঁড়ি ভেঙ্গে নিচে নেমেই সে দেখে তাঁর অফিসের কালো গাড়িটি ইতিমধ্যে ফ্ল্যাটের মুখ্য দ্বারে এসে অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। তাই সে আর সময় নষ্ট না করে ফ্ল্যাটের ওয়াচম্যানের সাথে একবার দেখা করে গিয়ে বসে গাড়ির ভেতরে। তারপর গাড়ির দরজা বদ্ধ করে ড্রাইভারকে সবুজ সংকেত দিয়ে পকেট থেকে বের আনে এক জোড়া হেডফোন এবং একে একে করে গুজে দেয় নিজের দুই কানে। এরপর গাড়িটি চলতে শুরু করলে রক্তিম তাঁর মোবাইলে পছন্দের প্লেলিস্টটি চালু করে এবং ফোনটি পুনরায় জামার বুক পকেটে চালান করে পিঠটি এলিয়ে দেয় গাড়ির পেছনের সিটটাতে। এরপর হিন্দি ও ইংরেজি মিশ্রিত গান শুনতে শুনতে কখন যে তাঁর চোখটি লেগে আসে তা আর খেয়াল থাকে না রক্তিমের। তবে বেশ কিছুক্ষণ পর তাঁর তন্দ্রা কাটে ড্রাইভারের হাঁক-ডাকে,

-“স্যার, হাম পহোছ গেয়।”

চোখ মেলে রক্তিম দেখে তাঁর ড্রাইভার গাড়ির দরজা খুলে তাঁর দিকে হুমড়ি খেয়ে তাকিয়ে আছে। এদিকে মোবাইলে প্লেলিস্টের সমস্ত গান শেষ হয়ে কানের হেডফোনটি এখন কানের কাছে নীরবতা পালন করছে। সুতরাং কান থেকে সেটি খুলে মোবাইল সহ হেডফোনটিকে প্যান্টের পকেটে পূরে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে রক্তিম। এরপর গাড়ির পেছনের গিয়ে ডিঁকি থেকে জামাকাপড়ের বড় লাগেজ ব্যাগটি বের করতেই রাস্তার বড় ঘড়িটি বারবার ‘ঢং’ ‘ঢং’ শব্দে তাঁকে জানিয়ে দেয় বর্তমান সময়। “একদম সঠিক সময়ে এসে পরেছে সে”- মনে মনে এটি ভেবে নিয়ে বেশ খুশি হয় রক্তিম। তারপর বাম হাতে সুটকেসটি ধরে এবং ওপর হাতে লাগেজ ব্যাগটি টানতে টানতে সে প্রবেশ করে বিমানবন্দরের ভেতরে।

ঝাচকচকে এয়ারপোর্টের ভেতরে ঢুকে রক্তিম লক্ষ্য করে ভেতরটা যেন আর বাকি দিনের চেয়ে আজ একটু বেশী ভিড়। “সব আহেলির জাদু” মনে মনে এটা ভেবে নিয়ে সামান্য মুচকি হাসে রক্তিম। তারপর রিসেপ্সনের কাউন্টারের লম্বা লাইন উপেক্ষা করে কাছে গিয়ে নিজের পরিচয় দিতেই ভেতরের লোকজন প্রায় বিনা বাক্যব্যায়ে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দেয় দূরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লোকের দিকে। নিল সুট পরিহিত সেই লোকটি এতক্ষণ তাঁর দু’হাত বুকের কাছে ধরে এয়ারপোর্টে রানওয়ের দিকে তাকিয়ে প্লেনের ওঠা নামা দেখছিল; তবে রক্তিমের কাছে যেতেই সে তাঁর দিকে ঘুরে তাকায়। এরপর চশমা আড়াল থেকে খুঁতখুঁতে চোখ দিয়ে রক্তিমের আপাত মস্তক একবার জরিপ করে নিয়ে খেসখেসে স্বরে সেই বয়স্ক লোকটি বলে ওঠে- “আপনিই তাহলে রক্তিম?” লোকটির মুখে বাংলা শুনে কিছুটা বিস্মিত হয়ে সম্মতিসূচক মাথা নাড়ায় রক্তিম।

-“তা বেশ, বেশ। চিন্তা নেই, আমিও বাঙ্গালী। তো আপনার আইডি?”

পকেট থেকে নিজের আইডি কার্ড ও সুটকেস থেকে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজ বের করে রক্তিম বাড়িয়ে দেয় সেই লোকটির দিকে। লোকটি তাঁর পেছনের চেয়ারটিতে বসে চশমার নিচ দিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সেগুলিকে পর্যবেক্ষণ করার সাথে বলতে থাকে –“তো, এই পেশায় তো নতুন দেখছি। আগে যদিওবা পুলিশের চাকরি করতেন, যার দৌলতেই হয়তো আপনাকে এই কাজটি দিয়েছে। তবে…(একটা দীর্ঘ বিরতি নিয়ে) মালের পেছনে ছোটা ও মালকে পাহারা দেওয়া দুটো আলাদা বিষয়; জানেন তো নিশ্চয়ই?”

লোকটির মুখে অকস্মাৎ এমন একটি বিবৃতি শুনে এবার কিছুটা অবাক হয় রক্তিম। তাঁর চোখে-মুখেও বোধয় সেই বিস্ময় ভাবটাই ফুটে উঠেছিল, যা দেখেই বোধয় লোকটি এবার স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাঁর হাতে থাকা কাগজপত্রগুলিকে আবার রক্তিমের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে ওঠে,

-“এই নাও। আমার কাজ শেষ। এখন এখানেই অপেক্ষা কর যতক্ষণ না ম্যাডাম এসে পৌঁছচ্ছে।”

-“তবে রিসেপ্সনে আমি তো শুনলাম প্যারিসে ফ্লাইটটি আর কুড়ি মিনিটের মধ্যেই ছেড়ে দেবে?” আচমকা প্রশ্নটি করে নিজেই যেন কিছুটা বোকা হয়ে যায় রক্তিম। ওদিকে লোকটি ততক্ষন সেখান থেকে যাওয়ার উপক্রম করছিল; তবে রক্তিমের মুখে আচমকা এমন প্রশ্ন শুনে সে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে। তারপর রক্তিমের মুখ বরাবর কিছুক্ষণ লোকটি হা করে চেয়ে নিয়ে সহসা হোহো করে অট্টহাসি দিয়ে বলে ওঠে, -“শোন কথা, তোমার কি মনে হয়? এতো বড় তারকা যার বাবা কিনা এ দেশের টপ বিজনেসম্যানদের মধ্যে একজন। তাঁর মেয়ে কিনা যাবে ফ্লাইটে সাধারণ মানুষদের সাথে চেপে!!!”

এতটুকু বলেই লোকটি তাঁর আঙ্গুল উঁচিয়ে রক্তিমকে দূরে ইশারা করে বলে ওঠে- “ওই দিকে দেখো।” রক্তিম তাঁর আঙ্গুল বরাবর সে দিকে তাকাতেই দেখে দূরে সেখানে একটি এরোপ্লেন দাঁড়িয়ে আছে। আকারে সেটি আর বাকি বিমানগুলির তুলনায় কিছুটা ছোট; বোধয় প্রাইভেট প্লেন হবে। তবে প্রাইভেট হলেও এক চেটিয়া সাদা বিমানগুলির মাঝে সেটি যেন বেশ রাজকিও ভঙ্গীতে দাঁড়িয়ে আছে তাঁর গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। একবার তাকালে যেন সূর্যের আলোয় ঝলমল করতে থাকা সেই নতুন বিমানটির থেকে চোখ সরানো দায় হয়ে উঠবে যে কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে।

বিমানটির দিকে তাকিয়ে রক্তিমের দু’চোখ আটকে গিয়েছে এমন সময়ে লোকটি তাঁর পাশ থেকে বলে ওঠে –“ওটা হচ্ছে মিস সান্যালের পার্সোনাল প্লেন। আগের বছরই ওর বাবা ওকে আঠারোতম জন্মদিনের উপহার হিসেবে ওটা দিয়েছে। কেন খবরে তো দেখানো হয়েছিল! খবর-টবর দেখো না হে?” এই বলে সামান্য নিস্তব্ধ থেকে লোকটি আরও বলে ওঠে –“যাই হোক, আমি আসি তাহলে।”

-“হ্যাঁ…” অস্ফুট স্বরে কিছুটা অন্যমনস্ক হয়েই বলে ওঠে রক্তিমের। তাঁর মনোযোগ এখনও সেই প্লেনটির দিকেই নিবদ্ধ। ধনী ব্যক্তিরা যে নিজেদের চলাফেরার জন্য দামী গাড়ির পাশাপাশি পার্সোনাল প্লেনও রাখে তা সে আগের থেকেই জানত। তবে আজ এমনি একটি ভি.আই.পি. যাত্রীর পার্সোনাল প্লেন সামনের থেকে দেখে চোখ যেন সরতে চাইছে না তাঁর। তাঁর মনে পড়ে যায় দু-এক মাস আগে নিউজ চ্যানেলে দেখানো এই বিমানটির সংক্রান্ত খবর। তবে শুধু নিউজ চ্যানেল না বরং নিজের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়ার পেজেও আহেলি সেদিন টিভি এঙ্কার সেজে মাইক হাতে নিজের বিমান প্রদর্শন করিয়ে ছিল সকল দর্শককে। সেই বিমানের ভেতরে আরাম করার জন্য বেশ কয়েকটি কক্ষ এবং তাঁদের প্রায় সব কয়েকটি ইন্টারনেট পরিষেবা যুক্ত। এছাড়াও একটি ডাইনিং রুম সহ তাঁতে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি অঞ্চল যেখানে জাবটিও চিন্তা ভাবনা ছেড়ে আরামে সারাটা দিন অতিবাহিত করা যাবে যে কোন লোকের পক্ষে। তবে টিভিতে দেখা প্লেন যদি সামনে থেকে দেখে এতটা সুন্দর লাগে তবে তাঁর ভেতরে যাত্রা করা মেয়েটি সামনের থেকে আরও কতটা সুন্দর দেখাবে, এই ভাবনা মাথায় আসতেই আহেলির সুন্দর রূপটি ভেসে ওঠে তাঁর সামনে। এবং এরই সাথে তাঁর মনে পড়ে যায় দেড় বছর আগে সে রাতের কথা।

সে বছর এ দেশের প্রখ্যাত বিজনেসম্যান মিস্টার অনিরুদ্ধ সান্যালের বড় মেয়ে মিস অহনা সান্যালের বিবাহ হয়েছিল। সে যদিওবা এক এলাহি ব্যাপার ছিল, দুর্গা পূজোর ন্যায়ে প্রায় চারদিন ব্যাপি ঘটা বিবাহের পর্বগুলি সুট করেছিল এ দেশের সমস্ত নিউজ চ্যানেল। এমনিতে ছাব্বিশ বছর বয়সী মিস অহনা সান্যাল দেখতে কোন বলিউডের নায়িকাদের চেয়ে কম যায় না। তাঁর ওপর বিবাহের রাত্রে যে ভাবে লাল সাড়ি পড়ে ও সোনায় মুড়ে সে বিবাহের মণ্ডপে প্রবেশ করেছিল তাঁতে যেন খানিকক্ষণের জন্য প্রায় সকল দর্শকদের নজর কেড়ে নিয়েছিল নিজের ওপরে।

তবে খানিকক্ষণের জন্য বলার কারণ বিবাহ চলাকালীন কোন এক সহৃদয় ক্যামেরা ম্যানের দৌলতে টিভির স্ক্রিনে আচমকাই ফুটে উঠেছিল একটি অপরূপ দেখতে কিশোরী মেয়ের প্রতিচ্ছবি। সম্ভ্রান্ত সান্যালদের পরিবারের মাঝে দামী ঘাগরা ও চোলির পোষাক পরিহিত সেই মেয়েটি যেন সেই এক মিনিটের ঝলকেই নিজের রুপের জৌলুসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল সমস্ত পুরুষের বুকের ভেতরে। সেই রুপের দংশনে অবশ্য বাদ থাকে নি রক্তিমও। এরই সাথে এক লহমায় রক্তিমের মত টিভির দিয়ে চেয়ে থাকা সকল গরম রক্তের পুরুষদের মনে সে রাত্রে মূল আকর্ষণ ও কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল সেই মেয়েটি। এর সঙ্গে বিবাহরত সুন্দরী অহনার বিবাহে শোকাহত তাঁর পাগল প্রেমিক ভক্তরা নিজেদের বাঁচার জন্য নতুন রসদ হিসেবে খুঁজে নিয়েছিল সেই মেয়েটিকে।

এরপর কৌতূহল মেটাতে সেই মেয়েটির বিষয়ে ইন্টারনেট ঘেঁটে রক্তিম পরে জানতে পারে যে সেই সুন্দরী মেয়েটি আসলে কেও না বরং মিস্টার অনিরুদ্ধ সান্যালের ছোট মেয়ে আহেলি সান্যাল। আহেলি সান্যালের সক্রিয়তা যদিওবা ইন্টার কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় এর আগে তেমন ছিল না; থাকলে অবশ্য শোরগোল পরতে বেশী সময় লাগত না। তবে তক্ষণ না পড়লে কি হয়েছে, সে রাত্রের পর থেকে আহেলির নাম ও রুপের চর্চা বনের দাবানলের মত ছরিয়ে পরেছিল ইন্টারনেট জগতে। এক রাতের মধ্যেই ইন্টারনেট জগতে আচমকা সৃষ্টি হওয়া ভক্তদের জন জোয়ার দেখে এরপর একদিন আহেলির বাধ্য হয় নিজে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার একটিভ হতে। এরই সঙ্গে তৈরি হয় আহেলির নিজস্ব অফিশিয়াল ফ্যান পেজ এবং তাঁতে আপলোড হতে থাকে তাঁর বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও।

এরপর একদিন তাঁর একটি ব্লগে আর সকলের মতন রক্তিম জানতে পারে যে সে নাকি অতি সিগ্রই সিনেমার জগতে আসতে চলেছে। তবে তাঁর যা রূপ তাঁতে সিনেমার জগতে আসলে আর বাকি তথাকথিত নায়িকাদের অবস্থা যে বেশ করুন হয়ে উঠতে চলেছে তা আর বুঝতে বাকি থাকে না রক্তিমের। এদিকে ততদিনে আহেলি তাঁর রুপের মায়ায় যে আর বাকি ছেলেদের মতন রক্তিমের মনকেও গ্রাস করে নিতে সমর্থ হয়ে পরেছিল তা আর বলার অবকাশ রাখে না। কারণ সে দিনের পর জীবনে প্রথমবার রক্তিম বাধ্য হয়েছিল নিজের থেকে কোন সেলিবেটির ফ্যান পেজে গিয়ে তাঁকে ফলো করতে। এবং এরপর তাঁর মোহে বশবর্তী হয়ে রক্তিমের ফোন ও ল্যাপটপের গ্যালারি জুড়ে জায়গা করে নিতে থাকে আহেলির বিভিন্ন নতুন নতুন ছবি ও ভিডিও।

পুরনো দিনের কথা ভাবতে ভাবতে রক্তিমের এবার আচমকা খেয়াল হয় সেই লোকটির কথা। মাথা ঘুরিয়ে রক্তিম দেখে লোকটি নেই। লোকটি যে বড্ড বাচাল ছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই। সাধারণত সিকুরিটি ইন্সপেক্টরের পেশায় এমন বাচালতা শোভা পায় না। বোধয় ভিন ভাষী এই শহরে নিজের মতন একজন বাঙ্গালী খুঁজে পেয়েই তাঁর ভেতরকার বাঁচাল সত্তা উঁকি মেরেছিল উঠেছিল এক মুহূর্তের জন্য। তবে রক্তিমের চিন্তার কারণ সেটা নয় বরং তাঁর প্রিয়সির উদ্দেশ্যে বলা লোকটির একটি সম্বোধনে। একজন সাধারণ সিকুরিটি ইন্সপেক্টরের মুখে তাঁর ম্যাডামের উদ্দেশ্যে বলা মাল শব্দটি যেন বেশ কানে লেগেছিল তাঁর। ‘যা্‌! লোকটির নাম শোনা হল না!’ এটি খেয়াল হতেই বেশ আপ্সস হয় রক্তিমের। নাম জানলে হয়তো কোন ব্যবস্থা নিলেও নেওয়া যেতে পারত। চেয়ারে বসে আপ্সসের ভঙ্গীতে সামনের দিকে তাকিয়ে অন্য কিছু ভাবতে যাচ্ছে এমন সময়ে আচমকা যেন তাঁর কানের পাশ থেকে একটি চেনা কিন্তু অপ্রত্যাশিত মিষ্টি কন্ঠস্বর বলে উঠে-

-“হ্যালো! মিস্টার।”

[কে ডাকল রক্তিমকে? তবে কি রক্তিমের এতদিনের প্রতিক্ষার অবসান ঘটল? নাকি অন্যকিছু, জানতে হলে চোখ রাখুন এই সিরিজের পরের পর্বটিতে]

চলবে…

লেখিকা- স্নেহা মুখার্জি
 
Administrator
Staff member
Joined
Mar 16, 2024
Messages
1,176

পর্ব ৩ - Part 3​

কানের কাছে আচমকা আসা নারী কন্ঠস্বরটি শুনে যেন কিছুটা চমকে উঠে রক্তিম। এরপর তড়িৎ বেগে চেয়ার থেকে উঠে হতচকিত অবস্থাতেই মাথা ঘুরিয়ে দেখে তাঁর কানের পাশে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে। মেয়েটি যেন ইচ্ছে করেই কিছুটা দুষ্টুমির ভঙ্গীতে রক্তিমের কানের কাছে ঝুঁকে কথাটি বলেছিল; তবে রক্তিমকে অমনভাবে চমকে উঠে দাঁড়াতে দেখে সেও সোজা হয়ে দাঁড়ায়। রক্তিম দেখে মেয়েটি তাঁর কাজল টানা হরিণের মতন চোখ দিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে তারই দিকে। এর সাথে তাঁর লিপ্সিক রাঙা গোলাপী ঠোঁটে খেলা করছে একটি দুষ্টুমি মেশানো মিষ্টি হাঁসি। মেয়েটি যেন আচমকা রক্তিমকে পেছন থেকে চমকে দিয়ে বেশ মজা পেয়েছে। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটি যে আর কেও না বরং তাঁর এবং বর্তমান সময়ে সকল ছেলেদের ছোকরাদের একমাত্র ক্রাশ বিখ্যাত হবু তারকা আহেলি সান্যাল, তা বিশ্বাস করতে কিছুটা সময় নেয় রক্তিম।

এতদিনের প্রতীক্ষার পর আজ আহেলিকে সামনা সামনি দেখতে পেয়ে যেন চোখ সরাতে পারে না সে। এতদিন সে তাঁকে মোবাইল আর টিভিতেই দেখে এসেছে, তবে আজ যেন মোবাইলের স্ক্রিন ফুরে সে এসে দাঁড়িয়েছে তাঁর সামনে। রক্তিম এক মুহূর্তের জন্য তো নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারেনা। এতদিন টিভির স্ক্রিনে দেখা আহেলিকে আজ যেন সামনের থেকে দেখে আরও অবিশ্বাস্যরকম সুন্দরী লাগে রক্তিমের। আহেলির দিকে নিষ্ফল দৃষ্টিতে তাকিয়ে তাঁর রুপের মোহে আবিষ্ট হতে পরছে, এমন রক্তিমের চোখের সামনে হাত হিলিয়ে আহেলি বলে ওঠে- “হ্যালো মিস্টার! ভয় পেয়েছিলেন বুঝি?” এই বলে মুখে হাত চাপা দিয়ে খিলখিলিয়ে হেঁসে ওঠে সেই উনিশ বছর বয়সী তরুণী।

মুখ হাত চাপা দিয়ে হেঁসে ওঠায় ঝুন ঝুন শব্দে বেজে ওঠে আহেলির ডান হাতের চুড়িগুলি। রক্তিম দেখে আহেলীর পরনে একটি সুন্দর জরীর কাজ করা ঘাগরা ও চোলির পোশাক। সোনালি বর্ণের সেই পোশাকটি যেন বেশ নিখুঁত রাজস্থানি ভঙ্গীতে পরেছে সে। এদিকে ব্লাউসের ন্যায়ে ছোট করে বানানো তার ঊর্ধাঙ্গের চলিটি যেন তাঁর সুডোল স্তনদুটিকে ধরে রাখতে বেশ হিমশিম খাচ্ছে। পুরুষদের নজর বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট করার জন্যই সে সেটিকে এমন বিশেষ ভাবে বানানো, সেটি বুঝতে পারে রক্তিম। এর সাথে তাঁর গলায় ঝুলছে একটি দামী পাঁচ নলীর সোনার হাড়। সোনার প্রতিটি নলীর মাঝ বরাবর ঝুলছিল একটি করে উজ্জল লাল রঙের পাথর, তবে শেষ নলীর পাথরটি যেন তলীয়ে গিয়েছিল আহেলির সুডোল স্তনজোড়ার খাঁজের মাঝে। যেই হাড় পড়ে বিশেষত নাড়ীরা নিজেদের শোভা বাড়ায়, সেই হাড়কেই যেন আজ আহেলির নিজের বক্ষে স্থান দিয়ে উলটো হাড়ের শোভা বারিয়েছে।

এদিকে সেই সোনালি জরির কাজ করা চোলির নিচে উন্মুক্ত রয়েছে আহেলির মেধহীন পেট। সেই পেটে আবার জোড়ান একটি দামী সোনার কোমর বদ্ধনী, যার ওপর দিয়ে পেটের ঠিক মাঝ বরাবর উঁকি মারছে আহেলির নিখুদ ও সুগভীর নাভি। সেই নাভির নিচ বরাবর আবার শক্ত করে গোজা তাঁর খাগড়ার কোঁচ। যেটি তাঁর উলটনো কলশীর ন্যায়ে নিতম্ব বেয়ে বিসৃত হয়েছে তাঁর পায়ের গোড়ালি অব্ধি। সব মিলিয়ে সেই ঘাগরা ও চোলির পোষাকে তাঁকে যেন স্বর্গের থেকে নামা কোন অপ্সরার মতন লাগে রক্তিমের।

“তবে একি এটা তো সেই ঘাগরা যেটা দেড় বছর আগে ও প্রথম টিভিতে আহেলিকে পড়ে থাকতে দেখেছিল!” এই ভাবনাটি মাথায় আসতেই বিস্ময়ে সাথে কপালে দু’ভ্রুর মাঝে সামান্য ভাজ সৃষ্টি হয় রক্তিমের।

এদিকে রক্তিমের অমন নির্বাক প্রতিক্রিয়া দেখে এবার দুজনের মাঝের নীরবতা ভেঙ্গে আহেলি বলে ওঠে- “হ্যালো! মিস্টার? কি দেখছেন বলুন তো? আমি আপনার সাথে কথা বলছি।” এটি বলে কোমরের দু’পাশে হাত রাখে সে।

আহেলির কথাটি কানে যেতেই এবার যেন হুস ফিরে পায় রক্তিম। আহেলির দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে দেখায় কিছুটা লজ্জিত হয় সে। এরপর নিজেকে কিছুটা ধাতস্ত করে স্বাভাবিক কণ্ঠে বলে ওঠে,- “না কিছু না। আমি ভাবছিলাম এতো গরমে আপনি এমন ভারী পোশাক ও গয়না পড়ে এসেছেন।”

এটি শুনে আহেলি নিজের দিকে এক বার তাকিয়ে মুখে আবার আগের মতন মিষ্টি হাঁসি ফিরিয়ে এনে বলে ওঠে,- “ওহহ্‌ তাই বলুন। আমি তো ভাবলাম আমাকে দেখে বোধয় আপনার স্ত্রীয়ের কথা মনে পরে গেল। সে যাই হোক, আমি আহেলি সান্যাল।” নিজের পরিচয় দিয়ে হ্যান্ডশেকের জন্য রক্তিমের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় আহেলি। [তবে সেই পরিচয়ের খুব একটি দরকার ছিল না]

এদিকে রক্তিমও প্রতিক্রিয়া স্বরূপ নিজের ডান হাত বাড়িয়ে আহেলির নরম হাত স্পর্শ করে এবং স্পর্শ করা মাত্রই যেন একটা প্রবল বৈদ্যুতিক শিহরণ খেলে যায় তাঁর সমগ্র শরীর জুড়ে। তবে সেটি বুঝতে না দিয়ে নিজের কন্ঠস্বর কিছুটা ভারী করে রক্তিম বলে ওঠে- “নমস্কার আমি রক্তিম, রক্তিম বাগচী। আপনার সাময়িক দেহরক্ষী।”

এরপর তাঁদের করমর্দনের প্রক্রিয়া শেষ হলে আহেলি লাস্যময়ী ভঙ্গীতে হেঁসে বলে ওঠে, -“তো মিস্টার! কার কথা ভাবা হচ্ছিল শুনি, প্রেমিকা না স্ত্রী? তাঁর জন্য মন খারাপ করছে নিশ্চয়ই!”

-“ক্ষমা করবেন, আমি বিবাহিত নই। এছাড়াও প্রেম টেমের বিষয়ে আমি নেই। সুতরাং মন খারাপের প্রশ্নই এসে না।” স্পষ্ট ভাষায় বলে ওঠে রক্তিম।

-“যা…আপনাকে দেখে তো খুব সিরিয়াস মনে হচ্ছে।[একটি দীর্ঘ বিরতি নিয়ে] সে যাই হোক, গার্লফ্রেন্ড-ট্রালফ্রেন্ড থাকলে একটু কষ্ট হত বৈ কি। তবে নেই যেহেতু, তবে তো বেশ ভালো কথা। কারণ [আবারও একটু বিরতি নিয়ে মুখে দুষ্টুমির হাঁসি এনে চাপা স্বরে বলে ওঠে] আগামী একমাস আমি আপনার পথ ছাড়ছি না।” আহেলি এতটুকু বলে উঠতেই দুটি নিল কোর্ট পরিহিত লোক এসে হাজির হয় তাঁদের মাঝে। রক্তিম দেখে তাঁদের দু’হাতে বেশ বড় আঁকারের লাগেজ ব্যাগ। রক্তিমকে বিস্ময়ের সাথে তাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আহেলি বলে ওঠে, -“এরা হচ্ছে আমার সহকারী। এদের নাম রফিক ও ইমরান।”

এটি বলতেই লোক দুটি নিজের পকেট থেকে আইডি বের করে বাড়িয়ে দেয় রক্তিমের দিকে। তবে রক্তিম হাত নাড়িয়ে জানিয়ে দেয় এসবের দরকার নেই। এরপর আহেলি রক্তিমকে আসতে বলে পা বাঁড়ায় সামনে বিমানবন্দরের চেকিং সেক্টরের দিকে। পেছন পেছন রক্তিমও তাঁকে অনুসরণ করতে থাকে, তবে তাঁর চোখ নিবদ্ধ থাকে আহেলির গোল নিতম্বের দিকে। তাঁর চলার প্রতি পদক্ষেপে পায়ের তোড়ার খুঞ্ঝুন শব্দের সাথে যেন কেঁপে কেঁপে উঠছিল আহেলির ভরাট নিতম্ব।

এরপর চেকিং সেক্টরের কাছে যেতে একজন ব্যক্তি রক্তিমের হাতে থাকা স্যুটকেস দুটি নিজের কাছে চাওয়ায় রক্তিমের মনোযোগ ফিরে। তাঁর পোশাক দেখে রক্তিম বোঝে সে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষী। সুতরাং বিমানবন্দরের নিয়ম অনুযায়ী রক্তিম তাঁর হাতে ধরা সুটকেস দুটি ধরিয়ে দেয় সেই লোকটির হাতে।

এরপর বেশ কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে সমস্ত ব্যাগের পরীক্ষা হয়। তবে সেগুলির মাঝে রক্তিম লক্ষ্য করে একটি ব্যাগ যেন কোন রকম পরীক্ষা ছারাই আগে এগিয়ে যায় সকলের চোখের সামনে। যে ব্যাগটি বিনা চেকিং-এ বেরিয়ে যায় সেটি ছিল আহেলির। তবে বিষয়টি সকলের চোখের সামনে ঘটায় সে নিয়ে আর বেশী মাথা ঘামাল না রক্তিম।

ব্যাগদুটির মধ্যে সুটকেসটি হাতে পেতেই এবার রক্তিমকে আহেলির সহকারীরা নির্দেশ দেয় প্লেনে গিয়ে বসতে। তবে যাওয়ার আগে রক্তিম দেখে আহেলি যেন ফোনে কার সাথে কথা বলছে। ফোনের ওপাশের লোকটির জন্য বোধয় সে বেশ বিরক্ত। তবে সে দিকে আর মন নিয়ে সে পা বাঁড়ায় সামনে বিমানের দিকে। তাঁর কাজ তো শুধু তাঁকে সুরক্ষা প্রদান করা, আহেলির ব্যক্তিগত বিষয়ে মাথা ঘামানো তো নয়।

এরপর গ্রীসের চরা রোদকে খানিকক্ষণের জন্যে মাথায় নিয়ে রানওয়ে পেরিয়ে রক্তিম প্রবেশ করে প্রাইভেট বিমানটির ভেতরে। বিমানটিতে প্রবেশ করেই সে প্রথমে এগিয়ে যায় পাইলট কেবিনের দিকে। পাইলটকে ইতিমধ্যেই সেখানে বসে থাকতে দেখে রক্তিম তাঁকে জিজ্ঞাসা করে যে তাঁদের এই প্যারিস পর্যন্ত যাত্রাকাল কতক্ষণের হবে। এরপর পাইলটের কথা অনুসারে সে যা বোঝে তা হল, একভাবে চলতে থাকলে তাঁদের যাত্রা ৯ থেকে ১০ ঘন্টার হবে। এরপর পাইলট এও বুঝিয়ে দেয় যে তাঁরা আহেলির ম্যানেজারের বিমানে না ওঠা পর্যন্ত বিমানটি ছাড়তে পারবে না। এমন সময়ে আহেলির সেই কর্মচারীদের মধ্যে একজন এসে রক্তিমকে ডেকে দেখিয়ে দেয় তাঁর জন্য বরাদ্দ করা ঘর। ঘটিতে ঢুকেই রক্তিম দেখে তাঁর লাগেজটি যেন ইতিমধ্যে তাঁরও আগে সেখানে পৌঁছে অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য।

ঘরটি যেন কোন ফাইভ স্টার হোটেলের ঘরের চেয়ে কোন অংশে কম যায় না। বিমানে তাঁর জন্য বরাদ্দ সেই ঘরটি সাজানো রয়েছে বিভিন্ন নামি-দামী বিলাস বহুল জিনিস দিয়ে। দরজা দিয়ে ঢুকেই তাঁর ডান পাশে রয়েছে একটি রাজকীয় পালঙ্ক। পালঙ্কের ডানপাশে চারজিং পয়েন্ট সহ একটি ল্যাম্প ও ল্যাপটপ বা ফোন রাখার জন্য একটি ছোট্ট টেবিল। এছাড়াও পালঙ্কের ঠিক মাথার ওপরের দেওয়ালটিতে রয়েছে “বার্থ অফ ভেনাস” এর একটি নগ্ন পেন্টিং এবং তাঁর ঠিক বিপরীত দিকে অর্থাৎ দরজার বাম পাশে রয়েছে একটি ৭২’’ইঞ্চির কার্ভড প্লাজমা টিভি।

ঘরটিতে ধুকেই রক্তিমের মনে পরে যায় যে এটি সেই ঘর যেটি কয়েক মাস আগেই আহেলি নিজে টিভি রিপোর্টারের আঙ্কারের ন্যায়ে নিজের হাতে মাইক ধরে খবরের চ্যানেল ও নিজের অফিসিয়াল ফ্যান পেজে লাইভ পরিদর্শন করিয়েছিল সকলকে। এটি মনে পরার সাথে তাঁর মুখ দিয়ে আপনা থেকেই একটি কথা বেরিয়ে এসে,-
“ধনী বাপের মেয়ে হবার এটাই সুবিধা” এবং এটি বলার সাথে সে গিয়ে বসে সামনের সেই রাজকীয় নরম পালকটির ওপরে। এরপর সে পালঙ্কের হলুদ চাদরটির ওপর হাত বুলিয়ে কল্পনা করতে থাকে আজকের দেখা তার সুন্দরী রমণীটিকে। তাঁর মনে পরে সেদিন নিউস চ্যানেলে এই ঘরটির প্রশংসা করতে করতে আহেলি লাস্যময়ী ভঙ্গীতে খানিকক্ষণের জন্য নিজের শরীরটিকে এলিয়ে দিয়েছিল এই পালঙ্কটির ওপরে। রক্তিমের মনে হয় চাদরটির ওপর নাক ঠেকালে হয়তো এখনও সে পাবে আহেলির শরীরের মিষ্টি সুভাষ।

এই ভেবে সামান্য ঝুঁকে যেই না সে বিছানার চাদরে নিজের নাক ঠেকাতে যাবে ঠিক সেই সময়ে যেন দরজার কাছে একটি পদধ্বনি শুনতে পায় রক্তিম। অকস্মাৎ আসা সেই শব্দে প্রশিক্ষণের প্রতিটি বিষয় তৎক্ষণাৎ মাথা চারা দিয়ে ওঠে রক্তিমের। এবং সেরই সাথে তাঁর ডান হাতটিও দ্রুত চলে যায় তাঁর বেল্টের কাছে এবং কোমরের হোলস্টার থেকে বন্দুকটি টেনে বের করে দরজার দিকে দৌড়ে যায় সে।

[এখনও পর্যন্ত গল্পটি ভালো লেগে থাকলে চোখ রাখুন আমার আনা এই নতুন উদ্যোগ কিছু না বলা কথার দেহরক্ষী পর্বগুলি]

চলবে…

লেখিকা- স্নেহা মুখার্জি
 
Love reading at 18upchoti? You can also share your stories here.
[ Create a story thread. ]
Top