18upchoti !

Enjoy daily new desi sex stories at 18upchoti erotic literature forum. Also by creating an account here you will get exclusive access to features such as posting, discussion, & more. Feel free to sign up today!

Register For Free!
  • Activate dark mode by clicking at the top bar. Get more features + early access to new stories, create an account.
  • Thread Author

প্রতিহিংসা পর্ব ১ - Part 1​

সময়টা ১৭৫৭, ইংরেজ দের হাতে বন্দী হলেন নবাব। মুকুট পরে বাংলায় রাজত্ব করতে বসলেন মীরজাফর। তার কিছু বছর পর বেগতিক দেখে তাকে রাজ সিংহাসন থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। বাংলার নবাব হল মীরজাফরের নিজেরই জামাতা মিরকাশিম। সেও কিছু কালের মধ্যে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করলেন। তার ফলস্বরূপ ১৭৬৪ সালের বক্সারের যুদ্ধ। যুদ্ধে মিরকাশিমের হার হলো। পাকাপাকি ভাবে শুরু হল সমগ্র ভারত জুড়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আধিপত্য বিস্তার। কিন্তু এত বড়ো সাম্রাজ্যে এই কটা ইংরেজ বাহিনী শাসন করা সম্ভব ছিলনা। মুর্শিদাবাদের অত দূরে থাকা কলকাতায় বসে সেটাকে নিয়ন্ত্রন করা অসম্ভব। স্থানীয় শাসক লাগবেই। কিন্তু কারো প্রতিও ভরসা নেই। আবার যদি কেউ বিদ্রোহ করে বসে। তখন বাংলার তৎকালীন ব্রিটিশ সেনা মেজর মুনরো সিদ্ধান্ত নিল মুর্শিদাবাদ সহ্ আরও যত বিশাল ভূভাগ আছে সেসব বিভক্ত করে তাতে ছোটো ছোটো শাসক বসানো হবে। এবং তাদের কে পৃথক পৃথক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

শত্রুদের যদি শক্তিশালী না হতে দেওয়া যায় তাহলে শত্রুতা করবে কোন সাহসে। সেই মতে বহু শহর বিভক্ত করা হল। মুর্শিদাবাদও তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে তিনটে ছোটো শাসক বসানো হল। মুর্শিদাবাদের যে অংশটা ছিল সবচেয়ে বড় তার শাসন ভার পেল রাজা দিগম্ব রায় চৌধুরী। তেনার মত আজ্ঞাবহ দাস ইংরেজরা আর কোনোদিন পায়নি। তিনি যেমন ছিল নিষ্ঠুর তেমনি ছিল চরিত্রহীন। তার রাজত্ কালে প্রজা থেকে শুরু করে নিকটবর্তী শাসকরাও ভয় পেত। যুবতী সুন্দরী রমণীরা বাড়ি থেকে বেরোতে সাহস পেত না । তিনি তার শাসন কালে প্রতিবেশী বহু রাজাকে কূটনৈতিক পাঁচে ফেলে কত জমি কত নারী কত কত ধনদৌলত হাতিয়ে নিয়েছিল তার ঠিক ছিলনা। এর বিনিময়ে ইংরেজরা খাজনাও পেত মোটা মোটা। ইস্ট ইন্ডিয়া তার প্রতি বেজায় প্রসন্ন ছিল তার প্রতি। কিন্তু সমস্যাটা শুরু হল তার মৃত্যুর পর। তার তিন ছেলেই রাজ সিংহাসনের দাবি করে বসলো। প্রথম জন রঘু ছিল খুবই খাম খেয়ালী আর নারী নেশা পাগল। আর ছোটো ছেলে বিভাকর ছিলো খুব চিকন বুদ্ধির। নিয়ম অনুযায়ী বড় ছেলে রাজত্ব পেলেও ছোটো ছেলে ব্রিটিশদের বুঝিয়ে রাজত্বের থেকে ছোটো একটা অংশ নিজের নামে করে নেয়।

কিন্তু সেখানেও থামেনি সে, সে ধীরে ধীরে পুরো এলাকারই শাসনভার হাতানোর মতলবে থাকে। সাধাসিধে মেজ ছেলে বিরম্ভর নিজের পত্নীর পরামর্শে রাজত্বের দাবি চেয়ে বসেছিলেনই হটাৎ অকালে তার মৃত্যু হয়। লোকমুখে শোনা যায় তার অকাল মৃত্যুর পেছনে রাজেন্দ্রর ষড়যন্ত্র ছিল। রাজেন্দ্র রঘু চৌধুরী, রঘু চৌধুরীর একমাত্র সন্তান। জন্মাবার পরেই নিজের মাকে হারায়। বাবার খামখেয়ালী পনায় মায়ের অভাব আরও বহুগুন বাড়িয়ে তুলেছিল। মায়ের ভালোবাসা পাইনি বলেই বড় হতে হতে সব নারীদের শুধু তার ভোগ্য বলেই মনে হতো। নারীদেরও যে একটা মন আছে, তারাও যে মানুষ একথা সে ভুলেই গেছিলো। সে শুধু ভাবতো সব নারীরই কেবল পুরুষদের যৌন্য দাসী। তার উপর তার বাবা, দুই কাকা এবং তাদের মধ্যে রেসারেজি ও ষড়যন্ত্র তার মনকে আরও বিষিয়ে তুলেছিল। সবার চরিত্র, বাক্তিত্ব আর অবহেলা দেখে ছোটোবেলা থেকেই ধীরে ধীরে তার মনের মনুষত্ব বোধটা হারিয়ে যেতে থাকে। দশ বছর বয়সে এক প্রজাকে কুপিয়ে খুন করে সে। রঘু রায় অত্যন্ত সমস্যায় পরে।

ছেলেকে শাসন করার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে হয় বিপরীত, মনে মনে তার বাবার প্রতিও প্রচণ্ড আক্রোশ জন্মায়। আর পরিবারের মধ্যেকার রাজনীতি কূটনীতি দেখতে দেখতে অল্প বয়সে দুটোতেই মন ডুবিয়ে দেয়। তার সঙ্গে তরোয়াল চালানো, বন্দুক চালানো, ঘোড় সওয়ারী সবেতেই প্রচণ্ড দক্ষ হয়ে ওঠে সে। কিন্তু রক্তের যে দোষটা তা যাবে কোথায়? বারো বছর বয়সে মাদক সেবন। চোদ্দো বছর বয়স থেকে নারীসঙ্গ আর যৌনতার তীব্র নেশা পাগল। কিশোর থেকে তরুণের পথে যেতে যেতে অসংখ্য ধর্ষণ অসংখ্য খুন। কিন্তু কে ওকে কি করবে? কাকে ভয় করে রাজপুত্র? স্থানীয় ছোটোখাটো ব্রিটিশ সিপাহীরাও ওকে দেখে ডরায়। এরকম প্রতাপশালী বিক্রমের কারণেই অনেকে তাকে তার ঠাকুরদার সঙ্গে তুলনা করে। কিন্তু রাজেন্দ্র মনে মনে নিজেকে তার থেকেও মহান মনে করে। কানে মদত দেয় সুখচাদ।

রাজেন্দ্র এর ছোটবেলার বন্ধু সুখচাদ, ওদের নায়েবের ছেলে। রাজেন্দ্র এর বয়স এখন বাইশ, সুখচাঁদের কুড়ি। দুজনেরই বয়স খুব কম কিন্তু দেহ দুজনেরই নিরেট আর প্রচণ্ড শক্তিশালী। রাজেন্দ্রর ব্যাক্তিত্ব দেখলেই রাজ আভিজাত্য আর অহংকার বুঝতে পারা যায়। দু চোখে যেন একটুও ভয় নেই ওর। আছে শুধু রাগ আর অন্যের প্রতি অবিশ্বাস। সুখচাদকেই একটু ভরসা করে আর করে আমাকে। আমার নাম রেশমা, বয়স ছাব্বিশ। রেশমা নামটা দিয়েছে ওই। আমার আসল নাম রুকমিনী। রেশমের মত ফুরফুরে কোমর পর্যন্ত ঘন চুল বলেই ও আমার এই নামকরন করেছে। ও ছাড়া কারো এ নামে ডাকার সাধ্য নেই। ডাকা তো দূরে থাক আমার দিকে চোখ তুলে তাকাতে মানুষের বুক কাপে। ও এখানে আসলে এক নজরে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে। আমার লাল ঠোঁটে নজর ফেলে। খোলা নরম বুকে, গলায়, কোমরে এমনকি আমার গাড় চন্দ্রনাভির ভেতরে ওর নজর ঢুকে যায়। আমি নাচের তালে তালে ওর খেয়ালে মজে যাই। বুকের বা দিকটাও কেপে ওঠে। খুব লজ্জা পাই, হ্যাঁ একটা বাইজি হয়েও খুব লজ্জা লাগে তখন। হলুদ ফর্সা মুখটা লাল হয়ে যায় মুহুর্তে। জানি আমি অত্যন্ত সুন্দরী কিন্তু এমন এমন শয়ে শয়ে বাইজি আছে এখানে। কেউ কেউ তো আমার থেকেও সুন্দর। সবাইকে ভালো করে চেখেও দেখেছে রাজেন্দ্র। তবে ঘোড়ার গাড়িতে ২ মাইল পথ অতিক্রম করে রোজ শুধু আমার কাছেই কেন? কেন ছুটে এসে ওর মনের সব রাগ, অভিমান, দুঃখ কষ্ট আমার কাছে এসে ঢেলে দেয়?

সুখচাদ ও থাকে সঙ্গে কিন্তু আমরা যখন নাচগান থামিয়ে একে অপরের শরির ছুঁয়ে দুজনে পরম উষ্ণতায় মজে যাই তখন সে বাইরে গিয়ে দরজার পাল্লা বন্ধ করে দেয়। আজও তেমন সাধারণ রাত ছিল। রাজেন্দ্র আর সুখচাদ নিজেদের আসনে বসে ছিল। নৃত্য যখন সমাপ্তি হলো তখন দেখলাম রাজেন্দ্র কেমন অন্যমনস্ক হয়ে আছে। সুখচাঁদ কে চোঁখের ইশারায় জিজ্ঞাসা করলাম। সে চোখ দিয়ে মদের বোতলের দিকে ইশারা করে মুচকি হাসলো। আমি নিঃশব্দে উঠে গিয়ে পাশের টেবিলে সাজানো মদের বোতলগুলো থেকে একটা বোতল হাতে নিলাম। তারপর দুটো গ্লাসে ঢাললাম। রুপোর গ্লাস দুটি দু হাতে ধরে এগিয়ে আসলাম। একটা সুখচাদের হাতে দিলাম অন্যটি নিয়ে রাজেন্দ্রর সামনে উপস্থিত হলাম। মেঝেতে আমার একটা পা দু তিনবার নাচলাম। পায়ের নূপুরের শব্দ ছনছন করে সমস্ত নাচঘর জুড়ে প্রতিফলিত হল। রাজেন্দ্র মুখ উচিয়ে তাকালো। কোমরটা ঝুকিয়ে আমি মদের গ্লাসটা ওর সামনে ধরলাম। একটা হাত বাড়িয়ে গ্লাসটা নিলো আর অন্য একটা হাত দিয়ে রাজেন্দ্র আমার বাড়িয়ে দেবা হাতটার কব্জি টেনে ধরলো। একটানে আমি ওর বুকে আছড়ে পারলাম। রাজেন্দ্রর বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে খিলখিল করে হেসে বললাম
__ আহ আস্তে রাজাবাবু, আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি

মদটা এক চুমুকে শেষ করে রাজেন্দ্র সেটাকে মেঝেতে ছুঁড়ে ফেললো। সারা ঘরে ঠং করে একটা বিকট শব্দ কান ফাটিয়ে দিল। রাজেন্দ্র সাপের মত রাগে ফোঁপাতে ফোঁপাতে আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিলো। তারপর মূহর্তে আমার বুকে থাকা ওড়না খানা খুলে ফেলে দিয়ে উথভ্রান্তের মত আমার বুক, পেটে চুম্বনের বর্ষা ছেটাতে শুরু করলো
__ আহ আস্তে রাজাবাবু, কি হয়েছে আপনার? এত রাগের কারন কি?
কথাটা শুনে রাজেন্দ্র থেমে গেল। নিজেকে সংযত করে আমার উপর থেকে উঠে বসলো। সঙ্গে আমিও বসলাম। নরম হাতে রাজেন্দ্র কে জড়িয়ে ওর কাঁধে মাথা রাখলাম
__ কি হয়েছে রাজাবাবু
__ প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে আমার। আমার ছোটোকাকা বিভাকর আমাদের আরও পঞ্চাশ বিঘা জমি হাতিয়ে নিয়েছে। আমার পিতময় সেদিকে যদি একটু খেয়াল রাখতো। এইভাবে চলতে থাকলে পুরো রাজ্যটাই হাতছাড়া হয়ে যাবে একদিন
__ আপনার পিতা কোনো পদক্ষেপ নেননি
কথাটা শুনতেই রাজেন্দ্রর মুখ রক্তবর্ণ হয়ে গেল।
__ সে মুরোদ কি তার আছে। ইচ্ছে করছে দুটোকেই মেরে পুরো রাজ্যটাকে নিজ অধিকারে নিয়ে আসি।
__ তবে সেটাই কর। এক ঢিলে সব কটা কে মারো।
__তারপর তোমাকে আমি নিজের রানী বানিয়ে রাখবো!
__আমি তো তোমার রানীই আছি মহারাজ…

কথাটা বলার পর নাচমহল জুড়ে কিছু সময় নিস্তব্ধতা ছেয়ে গেল। সেটা ভাঙলো সুখচাঁদ। এতক্ষণ সে নিজের গদিতে বসে সবকিছু দেখছিল। এবার একটু কেশে বললো
__ রাজেন্দ্র আমার দূরদর্শিতা যে কতখানি প্রখর তা তুমি ভালো করেই জানো। আমি তোমাকে বলছি বিভাকর কে মারলে চারিদিকে তোমার শুধু লাভ আর লাভ…
কথা শেষ না হতে আমি সুখচাঁদের দিকে মুখ ফিরিয়ে হেসে বললাম
__ হাহা হা শুনেছি তার একমাত্র পত্নী দেবী নয়নতারা অতীব সুন্দরী। এই মুর্শিদাবাদ কেন, বলতে গেলে তার মত রূপসী নারী নাকি গোটা বাংলাতে নেই। চোখ নাকি তার ভোরের কুয়াশার মত নেশাতুর? ঠোঁট নাকি গোলাপের চেয়েও লাল? ব্রিটিশ সহ অন্যান্য রাজারাও নাকি তার রূপে মুগ্ধ? আপনি কি পাগল হন না আপনার অমন রূপসী ছোটোমাকে দেখে? আমার প্রাণের রাজামশাই আপনার কি একবারও ওই মায়াবী সৌন্দর্যের গরম রসে ডুব দিয়ে স্নান করতে ইচ্ছে করেনা?

রাজেন্দ্র আর সহ্য করতে পারলোনা। আমার চুলের মুঠি ধরে টেনে শুইয়ে দিল। এক প্রকার ছিড়েই ফেলেদিলো আমার বুকের আবরণ। তারপর আমাকে জড়িয়ে ধরে বক্ষে মুখ ডুবিয়ে দিল। আমিও বুকের উপর গরম আরাম পেয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। রাজেন্দ্রর পাগলে আদর উপভোগ করতে করতে খিলখিল করে হাসতে লাগলাম। রাজেন্দ্র বুকে জোরে জোরে মুখ ডলতে লাগলো আর বলতে লাগলো
__ মাগী, ওই সুন্দরীর নাম নিবি না। ওর কথা মাথায় আসলে আমি শান্ত থাকতে পারিনা। আমি ওকে পাওয়ার জন্য সবকিছু করতে পারি সবকিছু!
__ রুক্মিণী কে জড়িয়ে ধরে শুধু বললে তো ও নারী তোমার বাহুডোরে ধরা দেবেনা রাজেন্দ্র। অতি দুষ্প্রাপ্য জিনিস পেতে গেলে তার চেয়েও অধিক দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিতে হয়, এটা তুমি কীকরে ভুলে যাচ্ছ
রাজেন্দ্রর হুস ফিরলো এবার। আমাকে ছেড়ে উঠে বসলো। আমিও উঠে বসে সুখচাদের সামনে দুহাত দিয়ে নিজের বুকের গোপন সৌন্দর্যটা আড়াল করে নিলাম। সুখচাঁদ আমার দিকে তাকিয়েও দেখলো না। রাজেন্দ্র বললো..
__ তুমি কি বলতে চাচ্ছ সুখচাঁদ?
সদুচাঁদের মুখে বাঁকা হাসির রেখা দেখা গেলো। তার ইঙ্গিতও আমি সম্পূর্ন বুঝতে পারলাম। তাই এবার আমিই রাজেন্দ্রর কানে ঠোঁট রেখে বললাম
__ মাছ পুকুরে খেলা করে বেড়াচ্ছে মহারাজ, সময় থাকতে জাল পেতে ধরুন!
সুখচাঁদও সঙ্গে বলে উঠল
__ অনেক সময় পেরিয়েছে, মাছ ধরার সময় এখন উপস্থিত মহারাজ। কিন্তু অন্যের পুকুরের মাছ ধরে আনতে গেলে কি করা উচিৎ রাজেন্দ্র বলো তো?
উত্তেজনায় রাজেন্দ্রর চোখ এদিক ওদিক করতে লাগলো। জোরে জোরে শ্বাস ফেলে বলতে লাগলো
__ অন্যের পুকুরের মাছ যদি ধরে আনতে হয় চুরি করতে হবে নয়তো বা পুকুরের মালিক কে সরাতে হবে, আর মালিক কে সরাতে প্রয়োজন চক্রান্তের।
সুখচাঁদ গলার শব্দটা নিচু করে বললো,
__ তুমি আমাদের ভবিষ্যত মহারাজ রাজেন্দ্র, চুরি তোমাকে শোভা পায়না। চক্রান্তই একমাত্র পথ। চক্রান্ত কীকরে করতে হয় তোমার থেকে ভালো করে কে জানে

কথা শেষ করে সুখচাঁদ নিজের হাতে ধরা মদিরার পাত্রটা মুখে তুললো। রাজেন্দ্র মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ কি যেন চিন্তা করে নিল। আমি মুখে হাত দিয়ে একমনে রাজেন্দ্রকে দেখতে লাগলাম। সম্পূর্ন মদ শেষ করে সুখচাঁদ যখন গ্লাসটা নিচে নামালো তখন রাজেন্দ্র ব্যস্ত হয়ে বলে উঠলো
__ ঠিক বলেছ তুমি সুখচাঁদ, এবার তোমার মতলব আমি টের পাচ্ছি। নিশানা ঠিকমত লাগাতে পারলে এক ঢিলে তিন পাখি মরবে। রাজমুকুট, রাজ্য, রানী সব হাতের মুঠোর মধ্যে বন্দী হবে। চলো সুখচাঁদ আর দেরি করা যাবে না। রেশমা চলি এরপর যখন আসবো তোমাকে রানী করে নিয়ে যাব প্রাসাদে। চিন্তা করোনা এখন আসি..

রাজেন্দ্র তার নরম আসন ছেড়ে দ্রুতগতিতে নাচমহল থেকে বেরিয়ে গেলো। সুখচাঁদও উঠে দাড়িয়ে রাজেন্দ্রর পেছন নিলো। শুধু যাবার সময় কোমরের ডোর থেকে খুলে সোনার মোহরের একটা থলি আমার আলতা রাঙা দুই পায়ের সামনে ছুঁড়ে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। আমি হাত বাড়িয়ে সেটা তুলে মুখের সামনে ধরলাম। বাইরের অন্ধকারে কতকগুলো ঘোড়াদের চি চি শব্দ হয়ে একটা ঘোড়ার গাড়ির চলে যাওয়ার শব্দ মিলিয়ে গেল। রাজেন্দ্র যেখানে এতক্ষণ আমার সঙ্গে গা এলিয়ে পরেছিল সেই আরামদায়ক মখমলের আসনটায় আমি ছড়িয়ে পরলাম। পা দুটো একে অপরের সঙ্গে বাড়ি দেওয়ায় ঝনঝন করে নূপুর বেজে উঠলো আবারও। আমি মোহরের থলিটার সুগন্ধ নাকে ধরে উপভোগ করলাম খানিকক্ষণ। তারপর পাশে ছুঁড়ে ফেলে শুতে শুয়ে জোরে জোরে হাসতে লাগলাম
 
Administrator
Staff member
Joined
Mar 16, 2024
Messages
1,187

প্রতিহিংসা পর্ব ২​

আমি রাজেন্দ্র কে দু বৎসর যাবৎ চিনি। শেষ এক বছর ধরে ও আমার কাছে নিয়মিত আসে। এই বছর খানেক ধরে আমি অনেকটাই বুঝতে শিখেছি ওকে। আমি খুব ভালো করেই জানতাম রাজেন্দ্র নিজের লক্ষ্যে প্রচণ্ড ভাবে স্থির। একটা শিকারি বাঘের মত ওর মনটা। কিন্তু কখনই বুঝিনি কাজটা ও এত তাড়াতাড়ি সম্পন্ন করে ফেলবে। সেদিন সকালে এই নাচঘরে বসেই আমি আর আমার সখী মন্ডলী নৃত্য অনুশীলন করছিলাম। হটাৎ সামনের বড়ো জালনাটায় চোখ পড়ল। জালানার ছিদ্রগুলো দিয়ে দেখলাম সামনের পথটায় ধুলো উড়িয়ে একটা ঘোড়া ছুটছে। ঘোড়ার পিঠে থাকা মানুষটার পোশাক দেখে বুঝলাম রাজদূত। বুঝতে পারলাম সবকিছু। বাইজি কুঠির সামনের পথটা সোজা চলে গেলে বিভাকরের সীমানায়। গোধূলিতে আবার দেখলাম তিন চারটে বড় ঘোড়ার গাড়ি ঘোড়ায় বসা দশ বারো বল্লমধারী সিপাহী আর সঙ্গে সকালের সেই ঘোড়ায় চাপা দূতটা রাজেন্দ্রর প্রাসাদের পথে। রাজদূত ছাড়া কারো পোশাকই আমাদের এখানকার মতন না।

রাত তখন দু পহর ঘুম ভেঙে গেলো প্রচণ্ড শব্দে। জালানা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম সারা রাস্তা জুড়ে মশাল আর তরোয়াল, বন্দুক নিয়ে সিপাহীরা এদিক ওদিক ছুটছে। সিপাহীদের হই হট্টগোল আর বন্দুক গোলায় সমস্ত মুর্শিদাবাদ কেপে উঠছে। আমার হৃদপিণ্ড ধুকপুক করতে আরম্ভ করলো। তাহলে আমার রাজেন্দ্র কি সত্যি নিজের কার্যসিদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে? সহী বিমলাও দৌড়াতে দৌড়াতে ঘরে ঢুকলো।
__ কি হয়েছে রে বিমলা?
বিমলা হাপাতে হাপাতে বললো,
__ শুনেই তোকে বলতে এলাম। মহারাজ রঘু রায় চৌধুরী খুন হয়েছেন, ওনার ভাই বিভাকর নাকি খুন করেছে মহারাজ কে। যুবরাজ রাজেন্দ্র রায় নাকি হাতেনাতে ধরে সিপাহী দিয়ে তাকে কারাগারে বন্দী করেছেন।
ওহ তাহলে বিকালের ঐ ঘোড়ার গাড়িতে একটায় বিভাকর ছিল। কেল্লা ফতে! আমাকে রাজরানী হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবেনা তাহলে। মনে মনে খুব আনন্দ হতে লাগলো। কিন্তু মুখে এ সবের কোনো চিহ্ন ফুটে উঠতে দিলাম না। বরঞ্চ বললাম,
__ ঠিক আছে তুই যা নিজের ঘরে যা…

বিমলা কিছু না বলে কৌতূহলে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল। কিন্তু আমার আর ঘুম এলোনা। আমি আমার নরম বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। শোবার সময় বুক থেকে শরীর আঁচলটা সরে গেল। আমার শারা শরীরে শিহরন খেলছে। তাহলে এই এত চাওয়া পাওয়া অপূর্ণতা এবার পূর্ণ হতে চলেছে। এই প্রথম বুঝি কোনো নারী পতিতালয় থেকে উঠে রানীর মর্যাদা পাবে। এবার কোনো লুকোচুরি থাকবেনা। রাজেন্দ্র যখন তখন আমাকে জরিয়ে ধরে আমাকে নিজের ভালোবাসার স্বাদ দিতে পারবে। আমাকে আরামে ভরিয়ে দেবে। প্রবল আনন্দে নিজের হাতটা আপনা থেকে নিচে চলে গেলো। শায়ার ভেতর ঢুকে আঙুল খেলতে লাগলো নিজের যোনি পথের প্রবেশ দ্বারে। আরামে মুখ দিয়ে শুধু এ টুকুই উচ্চারণ হতে থাকলো,
__আহ আহ রাজেন্দ্র রাজেন্দ্র ….

সকালের আলো ফুটতে ফুটতে অনেক কিছু ঘটলো। মাঝরাতে নাকি মুর্শিদাবাদের ব্রিটিশ জেনারেল কিছু সৈন্য সামন্ত নিয়ে রাজেন্দ্রর কাছে এসেছেন। তিনি আগে থেকেই এই নব তরুণ রাজেন্দ্রর ব্যাক্তিত্ব এবং রুদ্র প্রতাপে প্রচণ্ড প্রভাবিত ছিলেন। তিনি মনে করেন সারা বাংলাকে ব্রিটিশদের যদি ঠিকমত শাসন করতে হয় তবে এমনি ক্রুর আজ্ঞাবাহী রাজার প্রয়োজন। সকালের সূর্য্য উদয় হতেই জেনারেলের সমর্থনে রাজেন্দ্র নিজেকে নতুন রাজা হিসাবে ঘোষণা করলো। আর প্রধান মন্ত্রী করা হল সুখচাঁদকে। রাজেন্দ্র রাজা হতেই সবার প্রথমে নিজের পিতার সৎকার সম্পন্ন করল। তারপর প্রাসাদে ফিরে প্রথমে তার ছোটোকাকা বিভাকরের সঙ্গে আসা তার দেহরক্ষী দের কচুকাটা করল। বিকাল গড়ালে জেনারেল রাজেন্দ্রকে জানালেন রাজেন্দ্রর পিতার মৃত্যুর খবরে সমগ্র ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রচণ্ড শোকাহত। দস্তাক্ষরে সাক্ষ্যরের মাধ্যমে তিনি আরও জানালেন, রাজ খুনের মত জঘন্যতম অপরাধের জন্য বিভাকরের সঙ্গে রাজেন্দ্র যা খুশি করতে পারেন। এমন কি তার রাজত্ব, রাজস্ব, যা কিছু বিভাকরের আছে তা ইচ্ছে করলেই নিজের দখলে আনতে পারেন। ব্রিটিশরা এতে কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করবে না।

দস্তাক্ষর হাতে ধরেই রাজেন্দ্রর চোখ আগুনের মত হয়ে উঠল। নিজের ঘরে একা একা হো হো করে হেসে উঠলো। যা চেয়েছিল সেটাই হল। বেচেঁ থাকতে যে লাভ হয়নি নিজের ছেলের হাতে খুন হয়ে রাজেন্দ্রকে সেই লাভ করিয়ে দিয়ে গেল পিতা। মনে মনে রাজেন্দ্র বলতে লাগলো,
__ বিভাকর নিজেকে খুব বুদ্ধিমান ভাবতে তাই না। তুমি ভেবেছিলে অজগর সাপের মত আস্তে আস্তে এই রাজ্যটাকে গিলে নেবে। কিন্তু দেখ আজ আমি তোমার হাঁটুর বয়সী হয়েও সিংহের মতো এক থাবায় তোমার সবকিছু কেড়ে নিলাম। তোমার রাজত্ব কারলাম, রাজ পোষাক করলাম এবার তোমার চাদের চেয়েও অপরূপ সুন্দর স্ত্রীটিকে কেড়ে আনবো। তাকে টেনে এনে নিজের বিছানায় এনে ফেলবো। আমার দেহের আগুনে পুড়িয়ে ছারখার করবো তোমার অমন সুন্দরী রানিটিকে।

ব্রিটিশরা যখন রাজ মহল থেকে প্রস্থান নিল তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হবে হবে। তারপর পরই মুষলধারে বৃষ্টি নামলো। সেই প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে দেখা গেল বিরাট এক সেনার দল শিকারি বাঘের মত ঘোড়ায় চেপে বিভাকরের রাজ্যের দিকে চলেছে। তাদের নেতৃত্বে রয়েছে সুখচাঁদ। বাইজি প্রাসাদের সামনেও একটা সুসজ্জিত রথ এসে দাড়ালো। আমি জানতাম রাজেন্দ্র কথার খেলাপ করেনা। আমাকে সখিগণেরা উল্লাসের সঙ্গে সাজিয়ে গুছিয়ে দিল। তারপর সবাই ধরে রথে তুলে দিল। রথ চলতে শুরু করল রাজ প্রাসাদের দিকে। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও রথের খিড়কি দিয়ে স্পস্ট দেখতে পেলাম ধীরে ধীরে প্রকাণ্ড রাজপ্রাসাদ খানা আমার দিকে এগিয়ে আসছে। প্রচণ্ড আবেগে চোঁখের কোন থেকে জল গড়িয়ে মুখ ভাসিয়ে দিল।
বিভাকরের রাজ্য তখনো কিছু জানেনা। যারা বিভাকরের সঙ্গে আসা সবাই মরেছে। কে কোনো উ খবর পাঠাতে পারেনি। কিন্তু প্রাসাদের মধ্যে নিজের নরম বিছানায় উবুড় হয়ে পরমা সুন্দরী রানী নয়নতারার মন কেন জানিনা কিসের অজানা আশঙ্কায় চঞ্চল হয়ে উঠছিল। লতার মত ঘন চুলের রাশিগুলো কখন মসৃন পিঠ থেকে খসে মেঝেতে লুটিয়ে পড়েছে তিনি খেয়াল করেননি।
__ রানী মা সারাদিন কিছু খাননি আপনি। এখন কিছু খাবেন চলুন।

নিজের দাসীর কোথায় চোখ ফেরালো নয়নতারা। কাজলের সঙ্গে মাদক মিশিয়ে পরে বুঝি ওই দুটি চোখে। কি নেশাতুর! দাসীর কথায় তার নরম লাল ঠোঁটদুটো কেপে উঠল
__ না গো কঙ্কা, আমার খেতে ভালো লাগছেনা
দাসী আস্তে করে এগিয়ে এসে ওনার চুল গুলো দুহাত দিয়ে গুছিয়ে মেঝে থেকে তুললো। সেগুলো নয়নতারাকে পাশে গুটিয়ে রেখে বলতে লাগলো,
__ তা বললে হয় রানী মা, রাজা মশাই শুনলে তো রাগ করবেন
__ আহ বলছিনা খাবোনা। আচ্ছা তোমাদের রাজা এত দেরি কেন করছেন বলোতো?
তারপর সোজা হয়ে পালঙ্কের উপর বসলো নয়নতারা। আবার দাসীকে বলতে লাগলো
__এমন তো হয়না। ওই যে আমার ভাসুরের দূত এসে নিয়ে যাওয়ার পর প্রায় এক রাত একদিন কেটে গেল। জমি ভাগাভাগিতে কি এত সময় লাগে?
বলে নয়নতারা আলতা আর নূপুর পরা পা দুটো পালঙ্ক থেকে ঝুলিয়ে দিলো। দাসী মেঝেতে বসে সেই নরম মসৃণ পা দুটো নিজের হাত দিয়ে টিপে দিতে লাগলো
__ রানী মা আপনি তো শুধু একজন নারী নন, আপনি তো স্বর্গের দেবী। আপনার মত এত ধৈর্য এত বুদ্ধিমতি আর কে আছেন? আপনার মুখে কি এই কথা মানায়? আপনি তো জানেনই রাজপাঠ আর রাজনীতি কতটা জটিল। এর সমাধানের কোনো সঠিক সময় নির্ধারণ করা যায়? আপনি আর বিচলিত হবেন না। হয়তো তিনি এই প্রচণ্ড বরষা দেখে ওখানেই আছেন। কাল সকাল হতেই রওনা দেবে
দাসীর কথায় নয়নতারার বিচলিত মনটা একটু শান্ত হলো। গলার সুরটা এবার নরম হয়ে এলো
__ বহন্নলা খেয়েছে?
বিহন্নলা রাজা বিভাকর এবং রানী নয়নতারার একমাত্র কন্যা। মায়ের মুখের মতোই অপরূপ মুখের গড়ন পেয়েছে সে। এই সামনের যোষ্ঠে মেয়েটির তিন বৎসর পূর্ণ হয়েছে। দাসী উত্তর দিল,
__ হ্যাঁ খেয়েছে। তাকে আমি খাইয়ে অনেক আগেই তার ঘরে ঘুম পাড়িয়ে এসেছি। আপনিও কিছু খেয়ে নিন এবার রানী মা…
__ আচ্ছা এতকরে বলছো যখন নিয়ে এসো যাও…

নয়নতারা মৃদু হেসে সম্মতি জানালো। হাসলে যে তার রূপের মাধুর্য্য আরও কতগুণ বেড়ে ওঠে যারা দেখেছে শুধু তারাই জানে। দাসী কঙ্কাও হেসে ঘর থেকে বেরতে যাবে হটাৎ বিকট একটা শব্দে সারা মহল কেপে উঠলো। রানী আর দাসী প্রথমেই দুজন ভাবলো এই প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে মহলের উপর বুঝি বজ্র এসে পড়লো। কিন্তু একটু পরেই তেমন কান ফাটানো শব্দ আবার হয়ে উঠলো। তারপর অনবরত চলতেই লাগলো। প্রচণ্ড বর্ষার মাঝেও শোনা যেতে লাগলো ব্যস্ত মহলরক্ষীদের চিৎকার।

সুখচাঁদের আদেশে তার সেনারা প্রচণ্ড বর্ষার ভেতরে আক্রবন করে বসেছে। অল্প সংখ্যক অপ্রস্তুত মহলরক্ষিরা পেরে উঠলোনা সেই অক্রবন রুখতে। সুখচাঁদের সঙ্গে যে সেনার দল পাঠানো হয়েছিল তারাা প্রচন্ড পরাক্রমী, উন্নত পশিক্ষণ প্রাপ্ত এবং বরষা কিংবা খরা দু জায়গায় লড়তে অত্যন্ত পটু। তার উপর তাদের আরও একধাপ উন্নত কেড়েছে ব্রিটিশদের থেকে উপহার পাওয়া উন্নত ইউরোপীয়ান বন্দুক, কামান আর গোলা বারুদ। কিছুক্ষণের মধ্যে মহলের পহরীরা ধরাসাহি হলো। গুলিবিদ্ধ হল মহলের বেশিরভাগ প্রহরিরা। কেউ গুলিতে মরলো। আর যারা মরল না সুখচাদের আদেশে সেই সবাই কে তরবারি আর বল্লোমে কুপিয়ে খুন করা হলো। মহলে আর কোনো পুরুষ জীবিত রইলনা। মহলের সমস্ত সুন্দরী আর দাসদাসীরা বন্দী হলো। বন্দী হলো স্বয়ং রানী নয়নতারা এবং তার একমাত্র পুত্রি। দাসী কঙ্কা রানী ও তার মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল কিন্তু মহল থেকে পালানোর আগেই সুখচাদের সেনারা রানীর কক্ষে প্রবেশ করে।

সুখচাঁদ নিজে বন্দী রানীর কক্ষে প্রবেশ করলো। রাণীকে চিনে নিতে তার একটুও অসুবিধা হলনা। ও রকম দাবদাহ কামনার আগুনে পরিপূর্ণ রূপ সবার হয়না। বৃষ্টিতে সুখচাঁদ এক্কেবারে ভিজে গেছে। মাথার ভেজা চুল একটু ঝেড়ে রানীর সামনে এসে দাড়ালো। রানীকে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করতে থাকলো। রানীর রাগী ও সন্ত্রস্ত চোখদুটি সুখচাঁদ সহ্ ঘরের সব আক্রমণকারী বন্দুকধারী সিপাহিদের চোখ মুখে গিয়ে পরতে লাগলো। রানী নিজের পালঙ্কের পাশে দাড়িয়ে। কোলে শক্ত করে ধরে আছে তার মেয়েকে। দাসী কঙ্কা প্রচণ্ড ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে রানীর পাশে দাড়িয়ে। কথা শুরু সুখচাঁদই করলো, নিজের হাত জোড় করে রাণীকে কে প্রণাম করে হাসি মুখে খুব শান্ত ভাবে বললো,
__ নমস্কার দেবী, আপনার সৌন্দর্যের বর্ণনা বহু শুনেছি। আজ দেখলাম। কিন্তু আপনার রূপের প্রশংসা যতটা লোকের মুখে শুনেছি বাস্তবে আপনি তার থেকেও অনেক রূপসী। সত্যিই দেবী নয়নতারা আপনার মত এত রূপবতী নারী আমি আমার জীবনে কখনো দেখিনি
নয়নতারা সাপের মত ফোঁস করে উঠলো,
__ বয়স কতই বা তোমার, কি দেখেছো জীবনে এখনো তুমি। সামান্য একাট কিশোর হয়ে যে রানীর নাম নেয় সে যে কতটা আহাম্মক এবং কতটা উশৃঙ্খল তা বোঝাই যায়। সে দেখবে পৃথিবী।
__ হা হা সুন্দরী হাসালে তুমি, বয়সে কি আসে যায়। নারী তো নারী আর পুরুষরা পুরুষ। এবার আমার পরিচয় দেই। আমার নাম সুখচাঁদ, সমগ্র মুর্শিদাবাদের নতুন মহামন্ত্রী। আর আমার হাতে নয়নতারা আপনি এখন বন্দিনী। আর বন্দিনী শুধু বন্দিনীই হয়। আপনি করে বলছি এটাই অনেক
__ তুমি মন্ত্রী, দেখেছো আয়নায় নিজেকে? তুমি হয়তো বুঝতে পারছনা আমি কে? কাকে বন্দী বানিয়ে বিক্রম দেখাচ্ছো? শুধু কিশোর বলে এই দণ্ডের ছার পাবেনা তুমি, এখনো সময় আছে নিজের প্রহরী নিয়ে ফিরে যাও
সুখচাঁদ কথাটা শুনে হো হো করে হেসে উঠলো
__ দণ্ড কে দেবে রূপসী? এখন থেকে এই সমগ্র মুর্শিদাবাদে শুধু আমি আর আমাদের মহারাজ ছাড়া কারো দণ্ড দেবার ক্ষমতা নেই সেটা জেনে রাখুন
নয়নতারা এই প্রথম একটা প্রকাণ্ড ষড়যন্ত্রের পোড়া গন্ধ আচ করল। বিস্ময়কর চোখে গম্ভীর ভাবে প্রশ্ন করলো,
__ মুর্শিদাবাদের তো নির্দিষ্ট কোনো রাজা নেই। তাহলে রাজা কথা থেকে হলো। কে তোমাদের রাজা?
__ আমাদের মহারাজ আপনার অতি পরিচিত। আপনার ভাসুরের একমাত্র পুত্র, রাজেন্দ্র। তার পিতাকে হত্যা করে আপনার স্বামী বিভাকর এখন প্রাসাদের কারাগারে বন্দী

নয়নতারার বুক ধড়াস করে উঠলো। তার স্বামী ও তার দাদার মধ্যে রাজত্বের অধিকারে দ্বন্দ্ব মনোমালিন্য চলছিল। কিন্তু তা কখনই খুনোখুনি যুদ্ধের রূপ নিতে পারেনা। এ নিশ্চই তার ভাইপো রাজেন্দ্রর ষড়যন্ত্র। ওই টুকু ছেলে হলে কিহবে ওর চোখ দেখলে বোঝা যায় ও কি পরিমাণ শয়তান। প্রচণ্ড রাগে রানীর নরম লাল ঠোঁটদুটি কেপে উঠল,
___ এ ষড়যন্ত্র গভির ষড়যন্ত্র! আমি নিশ্চিত আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে। আমি এর বিচার চাইতে কলকাতা যাব, বরলাটের কাছে..
__ সুন্দরী তুমি যে কোথাও যেতে পারবেনা এখন। কোথাও যেতে দেওয়া হবেনা। মহারাজ রাজেন্দ্রর প্রাসাদ তোমার জন্য অপেক্ষা করছে…

নয়নতারা রাগে চিৎকার করে বললো,
__ একটা রানী তো ছাড়ো, কিকরে একটা মহিলার সঙ্গে কথা বলতে হয় সে শিক্ষাও পাওনি নাকি? আমাকে তুমি বলে সম্মধন করার দুসাহস তোমার হয় কি করে…
কথা শেষ হলোনা,
__ সাহসের কি দেখেছ এখনো সুন্দরী? দেখাচ্ছি

সুখচাঁদ রানীর পাশ কাটিয়ে যুবতী দাসী কঙ্কার সামনে এসে দাড়ালো। তারপর মূহূর্তে তার চুলের মুঠি টেনে ধরলো। দাসী ভয়ে আর বেদনায় আর্তনাদ করে উঠলো। সেই ভয়ার্ত শব্দে রানীর কোলে থাকা ছোট্ট বিহন্নলাও ভয়ে কেপে উঠলো। নয়নতারা রাগে চিৎকার করে বললো,
–কি করছো তুমি? একটা নারীর গায়ে হাত দেবার দুঃসাহস করার ক্ষমতা কীকরে হয় তোমার? ছাড়ো ওকে নইলে
__ নইলে কি, কি করবে? আমার ক্ষমতা এখন কতখানি তা এখনো বুঝতে পারনি সুন্দরি? কি করবে তুমি যদি না ছারি? অনেক সময় পেরিয়েছে আর কথা বাড়াতে চাইনা। শোনো তুমি যদি সেচ্ছায় যেতে না চাও আদেশ আছে তোমার চুলের মুঠি ঠিক এরকম করে ধরে টানতে টানতে রাজপ্রাসাদে নিয়ে গিয়ে তোমাকে যেনো ফেলা হয়। নয়নতারা তুমি শুধু সুন্দরী নও প্রচণ্ড বুদ্ধিমতীও, এবার তুমিই ঠিক করো তুমি কি চাও….

রানীর সারা দেহ রাগে টকবক করে ফুটছে। কিন্তু সত্যিই সে খুব বুদ্ধিমতি, স্থিরবুদ্ধি। সে বুঝতে পারলো এখানে কিছুই হবেনা। রাজেন্দ্রর সামনে তাকে যেতেই হবে। ওখানে গিয়েই তার সঙ্গে কথা বলবে। তারপর উপযুক্ত সময় বুঝে সেখান থেকে কলকাতা রওনা দেবে। কিন্তু সে এটা কখনোই জানত না রাজেন্দ্রর মনে মনে কি অভিসন্ধি। সে যে মনে মনে নয়নতারা কে নিয়ে কি কি করবে এই বন্দি বাঘিনী এখনো তা আন্দাজও করতে পারেনি।
 
Administrator
Staff member
Joined
Mar 16, 2024
Messages
1,187

প্রতিহিংসা পর্ব ৩​

রাতের বৃষ্টি আরও প্রবল হয়েছে তখন। অশ্বারোহী সৈন্যদল এবং সঙ্গে কয়েকটা ঘোড়ার গাড়ি রাজ প্রাসাদের ফটক অতিক্রম করে প্রাসাদের মুখ্য দ্বারে এসে থামলো। সব ঘোড়াগুলো একসঙ্গে ডেকে উঠলো। সুখচাঁদ ঘোরা থেকে নেমে নিজের তলোয়ার কোমড় থেকে বের করল। তারপর একটা গাড়ির পাশে এসে তার দরজা খুললো। গাঢ় আলতা রাঙা দুটি পা বেরিয়ে এল গাড়িটির ভেতর থেকে। ধীরে ধীরে একটা অতি রূপসীর উচুঁ লম্বা অবয়ব গাড়ি থেকে নেমে নিচে এলো। তার হাত দুটি শেকলে বাঁধা। সেই বাঁধা হাতে কোলে একটা কন্যা সন্তান। নামার সঙ্গে সঙ্গে এক পশলা বৃষ্টি এসে মা ও মেয়েকে সম্পূর্ণ ভিজিয়ে দিয়ে গেল। দুজনেই বরষার হিমে থরথর করে কাপছে। অতীব সুন্দরী স্ত্রীলোকটির সন্ত্রস্ত চোখ দুটি এদিক ওদিক ঘুরছে। তার সারা দেহ বৃষ্টির জলে ফুলে উঠে অপরূপ লোভনীয় হয়ে উঠেছে। সোনার অলংকারে ভূষিত নারীটির শরীরের সর্বত্র বৃষ্টির ধারা মদের ফোটার মত চুঁইয়ে চুঁইয়ে পরছে। শাড়ির আঁচলটা ঠাণ্ডা বাতাস আর বর্ষার জলে বুকের একদিকে সরে কুচকে গেছে। উচুঁ যুগলবন্দী স্তনের গভির গিরিখাত বেয়ে বৃষ্টির জল ভেতরে ঢুকে বুকের আবরণটা আরও ভিষন ফুলিয়ে তুলছে। আবার ওখান নিচে বয়ে গভির নাভিচক্রকে ঘিরে জমাট বাঁধছে এই কালো রাতের সমস্ত বৃষ্টির জল। তারপর নিচে যে ভেজা শাড়ির কুচি কোমরের নরম ভাঁজগুলো আকড়ে ধরে আছে তারই মধ্যে হয়তো ঢেলে গড়াচ্ছে সব জলরাশি। নারী মূর্তির মাথার লম্বা চুলগুলো ভেজা ঘার এবং খোলা পিঠের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। ভেজা শরীর আঁচলখানি মাটিতে পড়ে লুটোপুটি খাচ্ছে। ওষ্ঠের কোমলতা প্রচণ্ড গাড় হয়ে উঠেছে। গোলাপের পাঁপড়ির মত ঠোঁট দুটি, হরিণী চোখ এবং কি ভীষন যৌবনে ভরা তার রূপ। স্তনের উপরই ভাগে চোখ রাখলেই আন্দাজ করা যায় ব্লাউজের আবরণে ঢাকা ও দুটোর আয়তন কতখানি। মায়াবী যৌবনে পরিপূর্ণ কি নধর কামুকি তার রূপ। প্রচণ্ড বর্ষায় আগুনের মত দাউদাউ করে জ্বলছে। হাতছানি দিয়ে সকলকে ডেকে বলছে, এসো আমাকে চেটে পুটে নেও। সেনা সেপাহিরাও মনে মনে এই রূপের প্রতি প্রচণ্ড পরিমাণে পাগল হয়ে উঠছে। নারীটির প্রতিটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আড়চোখে নিরীক্ষণ করে চলেছে সবাই। সবার মনে বাসনা জাগছে। এখনি যদি হুকুম হয় এখনি সব সীমারেখা অতিক্রম করে পাতলা ভেজা শাড়িটার কুচি টেনে ছিঁড়ে ঝড়ো বাতাসে উড়িয়ে দেত সবাই। না জানি ওর নিচে কি মায়াবী ধন সম্পদ লুকিয়ে রেখেছে মায়াবিনী।

সুখচাঁদ প্রবেশদ্বারের প্রহরীকে আদেশ দিল,
__ যাও মহারাজ কে গিয়ে বলো আমরা বিজয় লাভ করেছি। তিনি যা আনতে পাঠিয়ে ছিলেন সেটি আমাদের হাতে বন্দী। তিনি যদি চান এখনি তার সম্মুখে হাজির করাতে পারি।
প্রহরী মাথা নিচু করে একটা প্রণাম করলো সুখচাঁদকে। তারপর দ্রুতগতিতে ভেতরে প্রবেশ করলো। নয়নতারা ফোঁপাতে ফোঁপাতে সুখচাঁদ কে করলো,
__ আমি বন্দিনি। আমি অপরাধী। কিন্তু আমার মেয়েটার কি দোষ। ও অনেক ছোটো বৃষ্টির জলে কষ্ট পাচ্ছে
সুখচাঁদ আড়চোখে বাচ্চা মেয়েটির দিকে তাকালো, তারপর কিছু ভাবলো। তারপর ভেবে বললো
__ তুমি একটা খুনীর স্ত্রী। কন্যাটিও খুনীরই মেয়ে। রাজ আজ্ঞা আসা পর্যন্ত এখানেই অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু রাণীমা আমি অতটা নির্দয় নই। বাচ্চা মেয়েটিকে অন্দমহলে নিয়ে যাওয়ার ব্যাবস্থা করছি। এই কে আছিস মেয়েটিকে ভেতরে নিয়ে যা

সঙ্গে সঙ্গে একটা সেপাই দৌড়ে এসে নয়নতারার কোল থেকে বিহোন্নলা কে কেড়ে নিলো। মেয়েটিকে নেবার সময় সিপাহীর একটা কোনুই নয়নতারার বক্ষের নরম পর্বত দুটি ইচ্ছে করেই ছুঁয়ে গেল। পর্বত দুটো দুলে উঠলো। নয়নতারা পরে যেতে যেতে নিজেকে সামনে নিলো। সিপাহীটা এমন মধুরুপের একটু খানি ছোঁয়া পেয়ে আড়ালে মুখ টিপে হাসলো। তারপর বাচ্চা মেয়েটিকে নিয়ে মহলের ভেতরের দিকে চলে গেলো। বিহন্নলা যাবার সময় খুব জোর খাটালো। খুব কান্নাকাটি করলো কিন্তু সিপাহীর কোল থেকে নামতে পারলোনা। নয়নতারা দূর থেকে চোঁখের ইশারায় মেয়েকে আশ্বস্থ করার চেষ্টা করল একটু। চোখের মধ্যে মেয়ে আর সিপাহী মহলের অন্ধকারে হারিয়ে গেলো। নয়নতারার মন ভারী হয়ে উঠলো। ভাবলো রাজেন্দ্রর সঙ্গে কথা বার্তা মিটিয়ে আগে মেয়ের সঙ্গে দেখা করবে। কিন্তু রাজেন্দ্রর ঘরে একবার যদি নয়নতারা প্রবেশ করে কোনদিন কি তার মেয়ের সামনে যাওয়ার সাহস হবে।
রাজেন্দ্রর কাছে সংবাদ নিয়ে যাওয়া প্রহরিটি কিছু পরেই ছুটে এসে সুখচাঁদ কে জানালো রাজা আদেশ করেছেন এখনি বন্দিনীকে নিয়ে তেনার কক্ষে যেতে। কথাটা শেষ হতেই আকাশ আলোকিত করে বজ্রপাতের এক বিকট শোনা গেল। নয়নতারা দেখল সেই আলোতে রাজপ্রাসাদের উচুঁ চুরাটা উজ্জ্বল হয়ে উঠল। এক সময় এই রাজপ্রাসাদের রাজবধূ হয়ে এসেছিল না সে। আজ এখানেই সে বন্দিনী। ভাবতে ভাবতে নয়নতারা শোকে অন্যমনস্ক হয়ে গেছিলো। সুখচাঁদ দুবার ডাকার পরেও সারা মিললো না। তখন রাগে নয়নতারার চুলের টেনে ধরলো।
__ কি রে সুন্দরী, কথা শুনতে পাচ্ছনা তুমি?

নয়নতারা ঘৃণায় সুখচাঁদের মুখে থুতু ছুঁড়ে দিলো। সুখচাদ এর মুখে থুতুটা লাগতেই সে নয়নতারার চুল ছেড়ে দিল। আগুন চোখে তাকিয়ে নিজের হাত দিয়ে থুতু পরিষ্কার করলো। নয়নতারা বললো,
__ আমার চুলে হাত দেবার সাহস হয় কি করে হয় তোর? জানোয়ার!
সুখচাদও প্রচণ্ড রাগে নয়নতারার চোখে চোখ রেখে দাত কিরিমিরি দিয়ে উঠলো। তারপর সজোড়ে একটা চর কষাল নয়নতারার গালে। নয়নতারা মুহূর্তে কেপে উঠলো, আহ করে অস্ফুট একটা আর্তনাদ করে উঠলো
__ তুই আমার মুখে থুতু দিস। দেখবি আমি কি করতে পারি? এই তোমাদেরকে বলছি, তোমরা সেনারা আজ নিজেদের যথাসাধ্য বীরত্বের পরিচয় দিয়েছ। আমি প্রচণ্ড খুশি হয়েছি। মহারাজ ও খুশি হবেন। কিন্তু মহারাজ তোমাদের পুরস্কৃত করার আগে আমি তোমাদের পুরষ্কার দিতে চাই। ঐ যে ঘোড়ার গাড়ি গুলোর মধ্যে যত দাসী আছে আজ রাতে ওরা সবাই তোমাদের সম্পত্তি। যাও যার যাকে ভালো লাগে তুলে নিয়ে মনের আশ দেহের ক্লান্তি মিটিয়ে নাও। শুধু দাসী কঙ্কাকে আমার কক্ষে নিয়ে গিয়ে রাখো।

এই টুকুই বলার অপেক্ষা ছিলো। এমনিতেই সেনার দল নয়নতারাকে দেখে ভেতরে ভেতরে গরম হয়ে ছিলো। সুখচাঁদের আদেশে সবাই গাড়ির উপর হামলে পরলো। বন্দিনীদের ভয়ার্ত ক্রন্দনের আর্তনাদ প্রচণ্ড বর্ষার মাঝেও দিগন্তে ছড়িয়ে পড়তে লাগল। নয়নতারাও আতঙ্কিত হয়ে পরলো। একটু একটু সন্ধেহ হতে লাগলো সুখচাদ ও ওর রাজার প্রতি। নয়নতারা প্রচণ্ড বিশ্বয় ও ভয়ার্ত গলায় চিৎকার করে বললো,
__ এ কি করছো সুখচাঁদ। এটা রাজধর্ম না। ওদের সঙ্গে এমন করোনা, ওরা সকলে নিরীহ
__ একটা খুনীর স্ত্রীর কাছে আমি রাজধর্ম শিখতে চাইনা। বেশি কথা না বলে চল ভেতরে
পরের কথাগুলো আরও অমর্যাদাকর লাগলো নয়নতারার
__ আমি তোমাদের রাজার সঙ্গে দেখা করতে চাই
সুখচাঁদ বললো,
__ সে জন্যই তো তোকে এখানে বন্দী করে নিয়ে আসা রে মাগী
সুখচাঁদের প্রচণ্ড তাচ্ছিল্যের ভাষা নয়নতারার মনে তীরের মন বিধলো। সে সাপের মত ফণা তুলে কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল কিন্তু কিছু বলার আগেই সুখচাঁদ তার একটা হাত শক্ত করে ধরে হিরহির করে টানতে টানতে মহলের মধ্যে নিয়ে যেতে লাগলো।
 
Administrator
Staff member
Joined
Mar 16, 2024
Messages
1,187

প্রতিহিংসা পর্ব ৪​

মহলের প্রবেশদ্বার পেরিয়ে উপরের সিড়ি বেয়ে যখন রাজেন্দ্রর কক্ষের সামনে এলো তখন দরজা খুলে আমি বাইরে এসে দাড়ালাম। আমার চোখ দাড়িয়ে গেলো নয়নতারা কে দেখে। যেন মোমের পুতুল। বর্ষায় ভেজা শরিরে তার সারা দেহের থেকে ভেজা চন্দন কাঠের সুগন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে। চাঁদের চেয়েও গৌর অঙ্গের সর্বত্র বৃষ্টির জল মুক্তার মত ছড়িয়ে পরে অনন্য রূপ ধারণ করেছে। কি মায়াবী সৌন্দর্য। এত সুন্দরও কি কেউ হয়
__ উফফ এই সেই পরমা সুন্দরী। সত্যিই যা শুনেছি এ যেন তার থেকেও সুন্দর। মহারাজের তো কোনো দোষ দেখিনা।
__ মহারাজের দোষ নেই মানে?
নয়নতারা বিস্ফারিত চোখে প্রশ্ন করলো, আমি হেসে বললাম,
__ তুমি রানী, পরে সব বুঝে যাবে
গর্জে উঠলো নয়নতারা, আমি তাকে থামিয়ে দিয়ে বললাম,
__ চুপ কোনো কথা নয় সুন্দরী, যা কথা মহারাজের সঙ্গে বোলো
নয়নতারা বললো,
__ তুমি জানোনা হয়তো তুমি কাকে কি বলছো…
আমি একটু হেসে নিলাম, তারপর নয়নতারার বৃষ্টি ভেজা কোমল মুখে হাত বুলিয়ে বললাম,
__ আর রূপসী তুমি জানো না আমি কে? শুনেছি তুমি যতটা সুন্দরি ততটাই বুদ্ধিমতী। আমার সাজ সরঞ্জাম দেখে বুঝতে পারছনা আমি কে?
নয়নতারা প্রচণ্ড ঘৃণার সঙ্গে আমার হাত থেকে নিজের মুখটা ঝরি সরিয়ে নিল, আমি মুখ টিপে হাসতে হাসতে বললাম,
__ নেও নেও ও রূপের তেজ ভাঙলো বলে। আর আমাকে তেজ দেখিয়ে কোনো লাভ হবেনা। আমি এই রাজ্যের হবু রানী। রানী রুক্মিণী, রাজেন্দ্রর হবু পত্নী। যাও যাও, একে নিয়ে যাও সুখচাঁদ
আবার হাতে টান পড়লো। আহ করে চেঁচিয়ে উঠলো নয়নতারা। ঝুমঝুম করে শব্দ করে উঠলো সুন্দরীর পায়ের নূপুর গুলো। কক্ষের দরজায় দাড়িয়ে থাকা দুই পহরি সুখচাঁদের আদেশে দরজা খুলে দিল। সুখচাঁদের হাতের টানে হুড়মুড়িয়ে ঘরে এসে পড়লো বন্দী নয়নতারা। বিশাল বড় আকারের ঘরটা। এই ঘর নয়নতারা চেনে। প্রকাণ্ড ঘরটার চারিধারের দেওয়ালে নামি দামি মোমবাতির স্ট্যান্ড আর লন্ঠন বাতি। মাথার উপরে প্রকাণ্ড একটা ঝাড়বাতি। এতো আলোর বন্যার সবটা ছুটে এসে নয়নতারার ভেজা সাড়া শরিরে লুটোপুটি খেয়ে গেল। ঘরের ঠিক মধ্যস্থানে নামি দামি তোষক বালিশে সাজানো একটি বিছানা। তার ওপাশের দেওয়াল জুড়ে বড় মাপের একটা ইউরোপীয়ান আয়না। আয়নার সামনে মুখ করে একটা বিরাট সিংহাসন। তারই উপর এলিয়ে আছে রাজেন্দ্র। হাতে তার রুপোর গ্লাস।
সুখচাঁদ বললো,
__ মহারাজ আপনার বন্দিনী কে নিয়ে এসেছি দেখুন।
রাজেন্দ্রর চোখ বন্ধ ছিল। এত প্রহর শুরু নয়নতারা রাজেন্দ্রর মনের ভেতর ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছিল। শেষে অস্থির হয়ে কয়েক গেলাস মদ খেয়ে সিংহাসনে এসে বসেছে। সুখচাঁদের কথায় চোখ খুললো। আয়নায় সুখচাঁদ ও নয়নতারার প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠেছে। কিন্তু রাজেন্দ্র শুধু নয়নতারাকে দেখতে লাগলো। বড়ো আয়নার মধ্যেই পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুরোটা চোখে বুলিয়ে নিল। চোখ পড়লো নয়নতারার ঠোঁটে, বুকের খাঁজে, কলসীর মত বাঁকানো কোমরটাকে, এমনকি খোলার পেটের নাভিটার মধ্যেও। রাজেন্দ্রর সব নেশা কেটে গেল। ভীষন উত্তেজিত হয়ে পরল ভেতরে ভেতরে। হয়ে উঠেছে নয। রাজেন্দ্রর গুপ্ত অঙ্গটা প্রচণ্ড শক্ত হয়ে ধীরে ধীরে লম্বা হয়ে উঠছে। মুখ পেছনে না ফিরিয়েই উচ্চস্বরে বললো,
__ সুখচাঁদ তোমার কাজে আমি অত্যন্ত খুশি। এখন তুমি আসতে পারো, আর হ্যাঁ যাবার সময় বন্দিনীর হাতের শেকলটা খুলে দিও

সুখচাঁদ কিছু বললো না। নিঃশব্দে নয়নতারার হাতের বাঁধন খুলে দিলো। তারপর আসতে আসতে ঘর থেকে বেড়িয়ে গিয়ে রাজার আজ্ঞা পালন করলো। সে বেরিয়ে যেতেই প্রচণ্ড জোরে শব্দ করে দরজা বন্ধ হয়ে গেলো। তারপর গোটা ঘর নিঃস্তব্ধ। শুধু নয়নতারার জোরে জোরে দীর্ঘশ্বাস রাজেন্দ্রর কানে আসতে লাগলো। রাজেন্দ্র এবার সিংহাসন থেকে উঠলো। ওর খালি গা। কোমর থেকে নিচ পর্যন্ত লাল রঙের একটা কাপড় পরে আছে। উঠে দাঁড়িয়ে গ্লাসে শেষ চুমুক দিয়ে সেটা সিংহাসনের উপর রাখলো। ধীরে ধীরে শিকারি বাঘের মত সোনার মৃগয়া শিকারের দিকে অগ্রসর অগ্রসর হতে লাগলো। রাজেন্দ্রর এই নেশাতুর টলমলে ভাব দেখে নয়নতারার কাজলে হরিণী চোখ রাগে আরও রক্তবর্ণ হয়ে উঠলো। আরও কাছে আসতে মদের অসহ্য গন্ধে নয়নতারা ঘৃণায় অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো
__ রাজনন্দনের কি ছিরি দেখো। এটাও মুর্শিদাবাদ কে দেখতে হলো, একটা মদমাতাল নাকি রাজা!

রাজেন্দ্রর সেদিকে গ্রুক্ষেপ নেই। ওর নজর খেলে বেড়াচ্ছে নয়নতারার সর্বত্র। নয়নতারা প্রথমে খেয়াল করলনা। কিন্তু কিছুক্ষন সব আবার কেমন নিঃশ্চুপ হওয়ায় রাজেন্দ্রর দিকে তাকাতেই রমণী কেপে উঠলো। নয়নতারা দেখলো রাজেন্দ্রর লোলুপ দৃষ্টি তার দেহের সর্বত্র কুরে কুরে খাচ্ছে। মুহূর্তে প্রচণ্ড বৃষ্টির সঙ্গে বাইরে কটা বাজ পড়লো। অনেক আলো একসঙ্গে ঘরটার মধ্যে ছড়িয়ে পড়লো। নয়নতারা আতকে উঠে কয়েক পা পিছিয়ে গেলো। আর তার কিছু বুঝতে বাকি নেই! তাই এই প্রথমবার তার বুকটা সবকিছু হরানোর ভয়ে ধড়াস করে উঠলো। কিন্তু সেও রাজ নন্দিনী, অহংকার কি এত সহজে যায়। তাই পরক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়ে প্রচণ্ড ঘৃণায় এগিয়ে এসে রাজেন্দ্রর গালে সজোড়ে এক চড় কষালে
__ জানোয়ার! এই তাহলে তোর মনে। এরজন্য আমার স্বামিকে ফাসিয়েছিস। তোর বাবাকে তাহলে তুইই খুন করেছিস…

এমন অপূর্ণ সুন্দরীর হাতে যে এত শক্তি রাজেন্দ্র তা আশা করতে পারেনি। তাই চড় সহ্য না করতে পেরে মাতাল শরীরে একটু নড়ে উঠলো। কিন্তু পরক্ষণে প্রচণ্ড রাগে শিকারি হায়নার মত খেঁকিয়ে উঠলো
__ আমার গায়ে চড় মারার সাহস হয় কি করে
__ তোকে মেরে ফেলা উচিৎ শয়তান
__ মরবে তো তোমার স্বামী, তার দাদাকে খুন করার অপরাধে
__ তুই খুন করেছিস
__ প্রমাণ করতে পারবে তো
এই একটা কথার পরে রানী নয়নতারা আর কথা বলতে পারলনা। শুধু তার দুচোখ প্রচণ্ড রাগ আর অসহায়তায় রক্তবর্ণ হয়ে উঠলো। রাজেন্দ্র পাক্কা মাগিখোর, এই পর্যন্ত কত রূপসীর সে সর্বনাশ করেছে। নয়নতারা রানী হলেও সেও তো নারী, রূপসী। রাজেন্দ্র রাগটা মনের ভেতর রেখে নিজেকে কোনোমতে সামলালো। তারপর নয়নতারার আরও কাছে চলে এলো। নয়নতারা নিশ্চুপ হয়ে দাড়িয়ে রইলো। ভয়ে ভ্রু কুচকে গেলো। রাজেন্দ্র বলল,
__ দেখ ছোটমা, তোমার স্বামী মানে আমার কাকা যত কিছু হাতিয়ে নিয়েছে এতদিনে তার তো কিছু একটা সাজা প্রয়জন।
__ আমি জানি ও কিছু করেনি
গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর দিল রমণী
__ সে তুমি বলছো, আমি অতি হৃদয়বান ব্যাক্তি। আমিও জানি সে খুন করেনি। কিন্তু প্রমাণ কি, প্রমাণ তো সব ওর বিরুদ্ধে ছোটো মা।
__ আমি জানি কিছু করেনি আমার স্বামী। তুই নিচ, পাপ তোর হারে হারে আমি এখন টের পাচ্ছি। কিন্তু….
__ কিন্তু তুমি ভালো করেই জানো তোমার স্বামীকে নির্দোষ প্রমাণ করা অসম্ভব

নয়নতারার চোখ ভিজে এলো এই কথাগুলো শুনে। তার মত পবিত্রতা স্ত্রী আর কেই হতে পারে কিনা সন্দেহ। স্বামীকে যে জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসে তার সামনে নিয়তি একি পরীক্ষা রাখলো। নয়নতারা অনেক্ষণ চুপ থাকার পর ভেজা ভেজা ঠোঁটে উত্তর দিল
__ আমি আমার স্বামীকে বাঁচাতে যা কিছু করতে হয় তাই করবো। আমার স্বামী নির্দোষ, আমি তা প্রমাণ করেই ছাড়ব

কিন্তু নয়নতারা নিজেও জানেনা সে কিভাবে তার স্বামীকে নির্দোষ প্রমাণ করে নিজেকে আর তার স্বামী মেয়েকে এই অমঙ্গলের হাত থেকে বাঁচাবে। তাই আতঙ্কে আর ঘোর কালো বিভীষিকা ময় ভবিষৎ এর কথা ভেবে তার নুইয়ে পরা দুই নেত্র থেকে জলের ধারা বাইরের বৃষ্টির মতই তার নরম মুখ ভিজিয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগলো। নতুন রাজার কিন্তু এ দৃশ্য এড়ালো। সে মনে মনে একটু ক্রুর হাসি হাসলো। তারপর ধীরে ধীরে বন্দিনীর এক্কেবারে সামনে এসে দাড়ালো। নিজের হাত এড়িয়ে থুতনি ধরে বন্দিনীর অপরূপ মুখখানি উচিয়ে ধরলো। তক্ষণাত নয়নতারা বাঘের মত গর্জে উঠে রাজাকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়ে বললো,
__ তোর এত বড় আস্পর্ধা তুই নিজের ছোটমার গায়ে স্পর্শ করিস। নিচ শয়তান….
আর নয়নতারা ওখানে দাড়ানোর সাহস পেল না। সে পুরপুরি বুঝে গেছে তার ভাইপো কি চায়। রাজেন্দ্রর মাতাল দু চোখ ও আগের থেকে আরও লাল হয়ে উঠেছে, ঠিক যেন নয়নতারার ভেজা দুই নরম ঠোঁটের মতই গাঢ় লাল। রাজেন্দ্র বলতে লাগলো,
__ দেখ তোমার স্বামী যে অপরাধ করেছে তার শাস্তি তো তাকে পেতেই হবে কিন্তু তুমিই একমাত্র পারো তাকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে কারাগারে সারাজীবন বাঁচিয়ে রাখতে
নয়নতারার কানে কথাগুলো বজ্রপাতের মত এসে পড়তে লাগলো। যে ঠোঁট দুটো এতক্ষণ রাগে ফুলছিল সে দুটো ভয়ে কাঁপতে লাগল।
__ কি বলতে চাইছিস তুই?

রাজেন্দ্র আবার অনেকটা কাছে এসে দাড়ালো। নয়তারার ভেজা শিথিলতা তাকে প্রথমবারের মত ছুঁয়ে দিল।
__ বুঝেও যখন বুঝতে চাইছো না তখন স্পষ্ট ভাবেই বলি, আমি তোমাকে চাই ছোটমা, তোমার অপরূপ সৌন্দর্যর স্বর্গীয় স্বাদটা আমি চেটেপুটে নিতে চাই নারী
নয়নতারা ভয়ে কয়েক পা পিছিয়ে এলোও রাজেন্দ্রর মুখের মদের গন্ধ তাকে ঘিরে ধরেছে। ঘরের মধ্যে তার দম নিতে কষ্ট হচ্ছে। এক ছুটে সেখান থেকে ছুটে পাইয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।
__ দেখ ছোটমা, তুমিই পারো নিজের স্বামিকে বাঁচাতে…
__ সে আমি এমনিও বাঁচিয়ে নিতে পারবো
এই বলে নয়নতারা পেছনের দিকে ঘুরে ঘরের দরজার কাছে এসে দাড়ালো। কিন্তু হাতে টান দিয়ে খোলার চেষ্টা করেই বুঝতে পারলো বাইরে থেকে সেটা বন্ধ করা। আতঙ্কিত গলায় প্রচণ্ড চিৎকারে হাক দিলো,
__ বাইরে কারা আছো, প্রহরীরা শুনতে পাচ্ছো, আমি রানী নয়নতারা আদেশ করছি দরজা খুলে দেও
কিন্তু বারবার হাক পারা সত্বেও কেউ দরজা খুললো না। এমন নয় যে বাইরে সে নারীর স্বর পহরির কানে পৌঁছায়নি। কিন্তু বাইরে তবুও দুজন প্রহরী এক্কেবারে স্থির থাকলো। একে অপরের মুখ চাওয়া চায়ি করে মিটিমিটি হাসলো।
 
Administrator
Staff member
Joined
Mar 16, 2024
Messages
1,187

প্রতিহিংসা পর্ব ৫​

ঘরের মধ্যে রাজেন্দ্রও উচ্চস্বরে হো হো করে হেসে উঠলো। ভীত নয়নতারা সেই শব্দে রাজেন্দ্রর দিকে ফিরে বলে উঠলো,
__ একি হচ্ছে রাজেন্দ্র, আমাকে যেতে দাও
__ পারলে চলে যাও কে তোমাকে বাঁধা দিচ্ছে। কিন্তু কি জানতো আমার প্রাসাদের সর্বত্র ক্ষুধার্থ শিকারির দলেরা পাহারা দিচ্ছে। বাইরে বেরোলেই যদি তোমার এত সুন্দর রূপ যৌবন তারা ছিঁড়ে খাবলে খায়, তখন?
__ ছি রাজেন্দ্র আমি না তোমার ছোট মা?
__ তুমি নারী আমি পুরুষ এতটুকু আমাদের আজ রাতটার সম্পর্ক
কথাগুলো শুনে নয়নতারা ঘৃণায় মরতে বসলো। এই নাকি রাজবংশীয় ছেলের প্রবাদ। ইচ্ছে করছে এখনি গুলি করে মেরে ফেলতে
__ কিগো সুন্দরি, যদি তুমি নিজের ইচ্ছেয় আমার ধরা দেও তো ভালো, নয়তো…
__ নয়তো কি?
__ নয়তো স্বামী কে তো হারাবেই, কে বলতে পারে তোমার ওত ফুটফুটে মেয়েটা, ওকেও যদি আমার সব প্রহরীরা একে একে ছুঁতে যায় ও কতক্ষণ সহ্য করবে
নয়নতারা আর থাকতে পারলোনা। কান ফেটে তার রক্ত বেরোনোর উপায়। রাগে, আতঙ্কে বিভীষিকাময় হয়ে উঠে দৌড়ে এসে দুহাতে রাজেন্দ্রর গলা চেপে ধরলো। নরম হাতের ধারালো নখগুলো বসে গেলো রাজেন্দ্রর গলাতে। কিন্তু রাজেন্দ্র অবিকল শান্ত
__ কি বললি তুই, আমার মেয়েকে, তোর বুকে বাঁধছেনা জানোয়ার। আমি তোকে শেষ করে দেব জানোয়ার
__ আমি বাঁচানোর কেউ নই তো সুন্দরী। পারো একমাত্র তুমিই

দুহাত দিয়ে রাজেন্দ্র নয়নতারার নরম কোমর স্পর্শ করলো। নয়নতারার হাত রাজেন্দ্রর গলায় আপনা থেকেই আলগা হয়ে এলো। তার মন ব্যাকুল হয়ে উঠলো। স্বামী মেয়ের মায়া তার বুক ভেদ করে তীরের ফলার মত গিয়ে বিধেছে। তাদের জীবন নয়নতারাই পারে রক্ষা করতে। যৌবনের বিনিময় জীবন পাওয়া। সেই যৌবন যেখানে একমাত্র তার স্বামীর অধিকার ছিল। নয়নতারার দুচোখ বেয়ে জল ঝরতে লাগলো। নিজের ভাইপোর কাছে কোন নারী তার সবকিছু বিলিয়ে ভোগ্য হতে চায়। এত দর্প, এত রূপ রাজেন্দ্র একে একে সব কেড়ে নেবে তাহলে। নয়নতারা মনে মনে ভাবলো এই রাজ্যে তার মত রূপবতী যেমন কেউ নেই তার মত হতভাগীও আর কেউ হবেনা কোনো কালে।

ইতিহাসও আজ স্তব্ধ। সঙ্গে নয়নতারাও। ইতিহাস যেন কোনোদিনও এই কলঙ্ক বহন না করে। নয়নতারার ভেজা কোমর খানি আকড়ে ধরেছে রাজেন্দ্র। এতদিনের আশা তাহলে আজ সফল। ভেজা শাড়িটা শরির থেকে খসে পড়তে আর কিছুক্ষণ। নরম ভেজা পেটে উষ্ণ চুম্বনের স্বাদ পেলো নয়নতারা। চুরি বালার ঝনঝন শব্দ করে সাথে সাথে তার দুহাত রাজেন্দ্রর মাথার লম্বা চুল কামড়ে ধরলো। রাজেন্দ্রর নিজের জিভ বেরিয়ে এসে গাঢ় নাভির ভেতরে ঢুকে গেলো। চেটে নিয়ে আসলো সেখানকার সব রস। স্পর্শে নয়নতারার উচুঁ বক্ষের উপরের অংশ আরও অনেকটা প্রসারিত হয়ে উঠলো। বাইরের তীব্র বরষাও যে কমলিয় দেহে এসে হার মেনে যায় তা থরথর করে কাঁপতে লাগলো। লজ্জায় নিজের চোখ বন্ধ করে নিলো নয়নতারা। কিন্তু চোখের অশ্রু আরও বেয়ে পড়তে লাগলো। রাজেন্দ্র উঠে দাঁড়িয়ে নয়নতারা কে আপাদমস্তক আরও একবার পরীক্ষা করে ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটিয়ে তুললো। কোমর ধরে নিজের বুকে টেনে আনলো নয়নতারা কে। উদ্বেগে অপরূপার ঘন ঘন নিঃশ্বাস পরতে লাগলো। তা এসে পড়তে লাগলো রাজেন্দ্রর মুখে গালে। কি মাধুর্য্য খেলা করে বেড়াচ্ছে নয়নতারার উজ্জ্বল মুখমণ্ডল থেকে। কোন ছাঁচে ঈশ্বর তাকে বানিয়েছিল। বুকে হাত বাড়ালো রাজেন্দ্র। ভেজা আঁচলখানি নিঃশব্দে বুক থেকে খসে মেঝেতে গড়িয়ে পড়লো। বুকের উন্মুক্ত খাঁজের অংশ ভীষন উজ্জ্বলতা নিয়ে রাজেন্দ্রর চোখে এসে ধরা খেল। হাতের টানে শাড়ির কুচিও অনায়াসে খুলে গেলো।
__রাজেন্দ্র, রাজেন্দ্র নাহ একদম না
নয়নতারা মুখে বাঁধা দিলেই একবারও জোর খাটানোর সাহস হলনা।
__ রাজেন্দ্র আমি তোমার ছোট মা।
প্রতিউত্তরে রজন্দ্র বললো,
__ তুমি আমার স্বপ্নের রানী

লাল শাড়িটা শরীর থেকে খুলে নিল রাজেন্দ্র। ভেজা শরীরে, ভেজা লাল ব্লাউজে, ভেজা লাল শায়ায় যেন স্বর্গের কোনো দেবীকে রাজেন্দ্র তার বহু বন্ধনে পেয়েছে। স্বচ্ছ রুপোলি দেহটা নিশব্দে থরথর করে কাপছে। কোমল শরিরে ফুটে ওঠা বক্ররেখা গুলি ধীরে ধীরে আরও গাঢ় হয়ে উঠে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। রাজেন্দ্র নয়নতারাকে হাতের বলে কোলে তুলে নিল। ঘুমন্ত শিশু যেভাবে এলিয়ে পরে নয়নতারাও রাজেন্দ্র বাহুতে একই ভাবে এলিয়ে পড়লো। ধীরে ধীরে রাজেন্দ্র চললো তার নিজের বিছানার দিকে।

নয়নতারার ঘন লম্বা চুলগুলো শূন্যে দুলতে লাগলো। ঝুমঝুম করে বেজে উঠলো পায়ের তোরা। নয়নতারা চোখ খুলে দেখলো সুন্দর বিছানার ওপরে তাকে শুইয়ে দিয়া হচ্ছে। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো কয়েকবার। ফুলের মত ছড়িয়ে পড়লো সারা বিছানায়। আলতা রাঙা পায়ে চুমু দিল রাজেন্দ্র। নয়নতারা নিজের মুখ একপাশ করে বিছানায় গুঁজে নিলো। এক একটা করে পায়ের নুপুর দুটি খুলে নেওয়া হলো। বিছানার উপর উঠে রাজেন্দ্র নিচ থেকে নয়নতারার উপড়ে উঠতে লাগলো। নয়নতারাও নিজের হাতদুটি দিয়ে বিছানার নরম চাদর আকড়ে ধরলো। বলতে লাগলো
__ নাহ রাজেন্দ্র তুমি থামো, এসব বন্ধ করো, নাহ

শায়ার নিচে অনায়াসে হাত বুলিয়ে পা ও উরুদুটির মসৃণতা কয়েকবার উপভোগ করে নিল। নয়নতারার বুক উপড়ের দিকে ফুলে উঠলো। চোখের জলে বিছানা ভিজে যেতে লাগলো। ভেজা শরীরের সর্বাঙ্গে বৃষ্টির জলধারা। নয়নতারা ফুটন্ত জলের মতো ফুটছে। হাতের টানে এবার সোনার কোমর বন্ধন খুলে গেলো। রাজেন্দ্র নিজের দাত দিয়ে শায়ার দড়িটাও খুলে নিল। ভেজা শায়াটাও এবার খুলে যাওয়ার অবকাশ। কিন্তু রাজেন্দ্রর নির্লজ্য ঠোঁটখানি নয়নতারার পেট স্পর্শ করলো। হালকা চর্বি জমা নরম পেটটি থক করে কেপে উঠলো।
__ আহ রাজেন্দ্র
অসহ্যতায় চিৎকার করে নয়নতারা একটু বাধা দিতে গেল। রাজেন্দ্র নিজের হাতদুটি দিয়ে তার হাত চেপে ধরলো। রাজেন্দ্রর মুখ বক্ররেখাটি অনুসরণ করে উপরে উঠতে লাগল। হালকা কেপে কেপে উঠতে লাগলো নয়নতারা। মায়াবী নধর দেহখানি কে যে এইভাবে পরাস্থ করা হবে কে জানত? ব্লাউজের ওপর থেকেই নরম স্তনের স্বাদটা কয়েকবার চেখে নেয়া হলো।
__ রাজেন্দ্র, রাজেন্দ্র নাহ…
__না ছোটো মা, আজ আমাকে প্রাণ ভরে তোমাকে আদর করতে দাও। আমি তোমার রূপে নিজের সবটা ঢেলে দিতে চাই গো নয়নতারা
ডাবের মত বেরিয়ে আসা বুকের উপরি ভাগে রাজেন্দ্রর কম্পিত ঠোঁট দুটি পরলো।
__ রাজেন্দ্র নাহ নাহ নাহ
নরম বুকে একটা চুমু খেল রাজেন্দ্র। ঝাকুনি দিয়ে উঠলো নয়নতারা
__ নাহহহ উফফফফফ রাজেন্দ্র

রাজেন্দ্র বুকে আর একটু মুখ ডুবিয়ে দিল। মুখটা বুকের খাঁজে এসে পড়ল। নধর দেহখানা জোরে জোরে ঝাড়ি দিয়ে উঠলো। নয়নতারা নিজে নিজের ঠোট কামড়ে ধরলো। রাজেন্দ্র নয়নতারার হাত ছেরে কোমরের পাশ দিয়ে গলিয়ে দিলো। জরিয়ে ধরলো নয়নতারা কে। বুকের উপরি ভাগে মুখ ডুবিয়ে চুষে খেতে লাগলো। নয়নতারা সহ্য করতে পারলনা। রাজেন্দ্রর হাতের বন্ধনে বাঁকিয়ে উঠে রাজেন্দ্রকে জোরে জড়িয়ে ধরলো। কাপা গলায় বলতে লাগলো
__ রাজেন্দ্র এ তুমি কি করছো, এ তুমি কি করছো। ছাড়ো ছাড়ো ছাড়ো নাহ, নাহ।
রাজেন্দ্র তার ছোটো মাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রুপোলি নরম গলাটায় চুমু খেল।
__ ছাড়তে বলোনা। এত সুন্দর কেন তুমি? এত কোমল কেন তোমার সারাদেহ? এত মসৃণ কেন তোমার ত্বক?
__ নাহ রাজেন্দ্র
গলার সোনার হার টেনে খুলে নিলো রাজেন্দ্র। ছুড়ে ফেললো মেঝেতে। ছিড়ে ফেলা হলো গলার বাকি মালাগুলো। কাধের উপর এসে এক্কেবারে দাত বসিয়ে দিলো রাজেন্দ্র। নয়নতারা চিৎকার করে উঠলো,
__ মা গো, ওহ মা গো
অফুরন্ত চুমুর বর্ষায় লাল হয়ে উঠলো সুন্দরী। নয়নতারা আরও কতক চিৎকার করলো। বাইরের বর্ষায় সব মিলিয়ে গেল। নরম ঘাড়ের উপর দিয়ে ঠোঁট ঘষে নিয়ে গেল রাজেন্দ্র। কানের লতিতে মৃদু কামড় বসালো। নয়নতারার আলতা রাঙা পা দুটো বিজনায় জোরে জোরে আছাড় খেয়ে পড়ল। রাজেন্দ্রকে সে আরও শক্ত করে জাপটে ধরলো। আঙুলের ধারালো নখগুলো দিয়ে রাজেন্দ্রর পিঠকে ফালাফালা করে দিলো
 
Love reading at 18upchoti? You can also share your stories here.
[ Create a story thread. ]
Top