পর্ব ১ - Part 1
স্পার্ম ডোনার – দ্বিতীয় কাহিনি – প্রথম পর্বনমস্কার বন্ধুরা , আমি সুমন । এই ওয়েবসাইটে এটা আমার দ্বিতীয় গল্প । তবে গল্প নয় , প্রথম ঘটনার মত এই গল্পও সত্যি ঘটনা অবলম্বনে । এই কাহিনির নামও আমি আগেরটার নামের রেখেছি কারণ এই ঘটনাটার সূত্রপাত আগের গল্পটার হাত ধরে । আমার আগের গল্পটা লেখার পর আমি পাঠক-পাঠিকাদের থেকে বহু মেল পেয়েছি । প্রতিটা পর্বের পরে আপনারা অনেকেই আমায় জানিয়েছেন আপনাদের গল্প পড়ে কেমন লেগেছে । যখন আমার গল্প পাঠাতে দেরি হয়েছে তখন অগুনতি মেল পেয়েছি । আমার দ্বিতীয় গল্পের সূত্রপাত এরমই একটি মেলকে কেন্দ্র করে । ঘটনাটা এবছর এর শুরুর দিকের । রোজকার বাকি মেল এর থেকে এইটা ছিল একদমই আলাদা । এক লাইনের মেল-এ শুধু একটা প্রশ্ন – “ আপনার স্পার্ম কাউন্ট কত ? “
এ আবার কিরকম সাইকো রে বাবা ! মানছি গল্প লিখছি স্পার্ম ডোনার নামে । তা বলে কেউ এরম সরাসরি স্পার্ম কাউন্ট কত জানতে চাইবে ? উত্তর দেব না ভেবেছিলাম কিন্তু কৌতুহল হচ্ছিল কে কেন এরম প্রশ্ন করছে খামোখা ! সাত- পাঁচ ভেবে উত্তর দিলাম। পরবর্তী কথোপকথনগুলো ছিল এরকম –
— ‘ এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত একটি তথ্য। এ নিয়ে অচেনা কারোর সাথে আমি কথা বলতে চাইনা । গল্পের ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে বলতে পারেন’
— ‘ প্রয়োজন আছে তাই জিজ্ঞেস করছি ‘
— ‘ আপনার প্রয়োজন থাকলেও আমি এটা নিয়ে কথা বলতে বাধ্য নই ! ‘
–‘ বললে আমার সাথে সাথে আপনারও লাভ হবে এটা বলতে পারি ।‘
–‘ আপনার যদি সত্যিই আমাকে প্রয়োজন হয় তবে পুরো ব্যাপারটা আমায় খুলে বলুন । ‘
–‘ সরি , আপনার স্পার্ম কাউন্ট তার উপর নির্ভর করছে আমি আপনাকে পুরো বিষয়টা জানাব কি না…’
আমার মাথা গরম হয়ে গেল! লোকজন ঠাট্টা করার আর টপিক পায়না ! বিরক্ত হয়ে লিখলাম ,
–‘ আপনার প্রয়োজন আপনার কাছে রাখুন , আমায় আর বিরক্ত করবেন না দয়া করে । করলেও আর উত্তর পাবেন না ! ‘
ওদিক থেকে এর পর আর কোনও উত্তর এল না ! আমিও রোজকার কাজের মাঝে ঘটনাটা ভুলে গেলাম দু-এক দিনে ।
প্রায় দিন দশেক পর আবার একটা মেল এল ।মেলটা ছিল এরকম …
‘ সব কথা আপনাকে খুলে বলছি । আমি আমার নাম পরিচয় আপনাকে বলব না , শুধু এটুকু বলি যে সমাজে আমার পরিচিতি রয়েছে । বিগত প্রায় বছর দুয়েক ধরে আমি ও আমার স্ত্রী সন্তানের জন্য চেষ্টা করছি , কিন্তু কিছু হচ্ছে না । ও ডাক্তার দেখিয়েছে কিন্তু ওর কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি । সমস্যাটা আমার। আমি বেনামে টেস্ট করিয়ে দেখেছি সেটা । তাই আপনার সাহায্য নিতে চাইছি । আপনি আপনার স্পার্ম কাউন্ট কত সেটা জানালে আমরা ব্যাপারটা নিয়ে এগোতে পারি ।‘
-‘ কিছু মনে করবেন না কিন্তু আমার কাছে পুরো ব্যাপারটা পরিস্কার হল না । আজকের দিনে এই প্রবলেমটার সমাধান করার অনেক পথ আছে। আপনি ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন তো । আর যদি ধরেও নি আপনার স্পার্ম কাউন্ট খুবই কম , আপনাদের অন্য কারোর স্পার্ম এর সাহায্য নিতেই হবে তাহলেও তার জন্য স্পার্ম ব্যাঙ্ক আছে! আপনি সেখানে না গিয়ে আমাকে সাহায্য চাইছেন তাও আবার আমায় না জেনে শুনে ! ব্যাপারটা কেমন গোলমেলে নয় কি ?!’
— ‘ আপনি ঠিকই বলেছেন কিন্ত সেগুলো আমার জন্য করা সম্ভব নয় কারণ আমার স্পার্ম কাউন্ট কম এই খবরটা তাহলে সমাজে সবাই জেনে যাবে আর এসব খবর মিডিয়াতে হট কেকের মত সেল হয় । সমাজে আমার ইমেজ খারাপ হতে দিতে আমি পারি না। তাই অগত্যা আপনার সাহায্য চাইছি …’
— ‘ আপনি কি সেলিব্রিটি ?’
— ‘ সেরকমই ধরে নিন ‘
— ‘ বুঝলাম । কিন্তু আপনি যেটা চাইছেন সেটা আমি পারব না কিছু মনে করবেন না । আমারও সমাজে একটা পরিচয় আছে । আপনার মত সেলিব্রিটি আমি নই ঠিকই কিন্তু আমিও আমার পরিচয় গোপন রাখতে বাধ্য। আমি একটা ওয়েবসাইটে অ্যাডাল্ট গল্প লিখি সেটা জানাজানি হয়ে গেলে তো সমাজে আমার সম্মানটাও থাকবে না তাই না ! ‘
— ‘ আপনার পরিচয় গোপন রাখা প্রয়োজন জানি বলেই আপনার সাহায্য চাইছি । আমিও আপনার পরিচয় জানব না আর আপনিও আমার পরিচয় জানবেন না । পুরো ব্যাপারটা গোপন ভাবেই হবে । ‘
— ‘ আপনি যত কথা বলছেন আমার ধোঁয়াশা আরও বেড়ে যাচ্ছে । আপনি ঠিক কি চাইছেন , কিভাবে চাইছেন আমি বুঝতে পারছি না । তবে এটুকু মনে হচ্ছে যে আপনার ব্যাপারটার মধ্যে আমার না ঢুকলেই ভালো !’
— ‘ আপাতত আমি আপনার কাছে এটুকুই জানতে চাইছি যে আপনার স্পার্ম কাউন্ট কত ?’
— ‘ কত আমার সেটা জানা নেই । দিদির জন্য যখন টেস্ট করিয়েছিলাম তখন কত এসেছিল আমার মনে নেই এই । আর এমনিতেও সেটা বহুদিন আগের রিপোর্ট । সেটা দিয়ে কিছু প্রমাণ হয়না ।‘
–‘ তাহলে আর একবার টেস্ট করিয়ে রিপোর্টটা আমায় মেল করে দিন । আপনার নামের জায়গা টা বাদ দিয়ে দেবেন ‘
–‘ আপনি আমায় কি ভেবেছেন বলুন তো ! আপনি চাইবেন আর আমি টেস্ট করাতে ছুটব ?? এই পুরো ব্যাপারটায় কি লাভ আমার ??’
— ‘ একটা টেস্ট করাতে আপনার হাজার – বারোশোর বেশি খরচ হবে না । টেস্ট করে রিপোর্ট টা আমাকে পাঠানোর জন্য আমি আপনাকে দশহাজার দেব । চলবে ??’
— ‘ এতটা টাকা দেবেন শুধু রিপোর্টটা জানার জন্য ?’
– হ্যা দেব। চলবে কি এতে ?
– চলবে । কিন্তু দেবেন কিভাবে । ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা ফোন নাম্বার আমি শেয়ার করব না!’
– ‘ সরাসরি ক্যাশ টাকা পাবেন । কলকাতায় আপনার পছন্দ মত জায়গায় আমার লোক গিয়ে টাকা দিয়ে রিপোর্ট নিয়ে আসবে আপনার থেকে ।
— ঠিক আছে ।
— আপনি টেস্ট করিয়ে আমায় জানান তারপর ডিটেলস গুলো ফাইনাল করে নেব । বাই ‘
কেন জানিনা লোকটার কথাগুলো এবার আমার নিছক ঠাট্টা বলে মনে হল না । ভাবলাম করেই নি । যদি পুরপুরি ঠাট্টাও হয় , আমার তো সেরকম ক্ষতির কিছু নেই । টেস্ট এর রিপোর্ট খুব ভালো এলো । যারা এই বিষয়টা জানেননা তাদের জন্য বলছি স্পার্ম কাউন্ট প্রতি ml-এ ১৫ মিলিয়ন এর বেশি হলে সেটাকে ঠিকঠাক ধরা হয় ।আমার কাউন্ট প্রতি ml-এ ১১০ মিলিয়ন , সাথে বাকি ফ্যাক্টর গুলোও ভালো । এক কথায় আমার স্পার্ম কোনও সক্ষম নারীকে সহজেই প্রেগন্যান্ট করতে পারবে । রিপোর্ট হাতে পেয়ে আবার মেল করলাম ।
-আমি রিপোর্ট পেয়ে গিয়েছি । কাল বিকেল ৫ টায় গড়িয়াহাটের মোড়ে আপনার লোক আসতে পারবে ?
– ওকে। আমার লোক এর কাছে গিয়ে আপনি বলবেন রিপোর্ট দিতে এসেছি। তাহলেই সে আপনাকে টাকাটা দিয়ে রিপোর্টটা নিয়ে নেবে আপনার থেকে । লোকটির ছবি আমি আপনাকে মেল করে পাঠিয়ে দেব কাল ।
পরদিন সাড়ে চারটেয় এলো ছবিটা । একটা ষণ্ডা মার্কা বডি গার্ড গোছের লোক । গড়িয়াহাটে লোকটাকে খুজে পেতে কোনও অসুবিধা হল না । লোকটার সামনে গিয়ে ‘ রিপোর্ট দিতে এসেছি’ বলায় লোকটা পকেট থেকে একটা খাম বের করে দিল আমায় । আমি একটু খুলে দেখলাম তাতে অনেকগুলো পাঁচশো টাকার নোট ! রিপোর্টটা লোকটার হাতে দিয়ে দিলাম কথা মত । উপর থেকে নিজের নাম এর জায়গাটা কেটে বাদ দিয়ে দিয়েছি আগেই । বাড়ি ফিরে এসে গুনলাম । কড়কড়ে কুড়িটা নোট !
প্রথম থেকেই জিনিসটাকে ঠাট্টা ভেবে এসেছিলাম কিন্তু লোকটা যে কতটা সিরিয়াস সেটা এবার ভালোই বুঝতে পারলাম ! এবার আমিই আগ বাড়িয়ে মেল করলাম ।
– টাকার জন্য ধন্যবাদ , রিপোর্ট দেখে মেল করবেন।
– আপনার রিপোর্ট খুবই ভালো দেখলাম । আপনার মতই একজনকেই আমার দরকার ছিল।
– থ্যাঙ্ক ইউ । এবার বলুন পরবর্তী ব্যাপারগুলো নিয়ে কিভাবে এগোতে চান । আপনি যতটা গোপনীয়তা রাখতে চান তাতে আমার মনে হয় না আপনি কলকাতার কোনও ক্লিনিকে আই.ভি.এফ করাতে চাইবেন । কোথায় করাবেন ভাবছেন ? এটা করাতে গেলে কিন্তু আমাকে আপনাকে আর আপনার স্ত্রীকে সামনে আসতেই হবে । আপনাদের পরিচয় আমি গোপন রাখব আর আপনারা আমার পরিচয় গোপন রাখবেন । তাই তো ?
– না । প্ল্যানটা ঠিক সেটা নয় । আমি মিডিয়ার লোককে একদম বিশ্বাস করিনা । কলকাতার বাইরে গিয়ে করালেও মিডিয়া ঠিক খবর করে দেবে । বাইরের রাজ্যে গেলেও ওরা পিছু ছাড়ে না ।
– তাহলে ? কি প্ল্যান আপনার ? বিদেশ ??
– না । তবে টাকা যে ফ্যাক্টর নয় আমার কাছে সেটা বুঝে গিয়েছেন আশা করি । অন্য অনেক সমস্যা আছে বিদেশে গিয়ে করানোর ।
– তবে ? কিভাবে হবে জিনিসটা ?
– স্বাভাবিক ভাবে যেভাবে হয়
– মানে?
– মানে আপনি আমার স্ত্রীর সাথে সেক্স করবেন ওর ওভুলেশন পিরিওড চলাকালীন । আপনার যা স্পার্ম কোয়ালিটি তাতে একটা ওভুলেশন পিরিয়ড সাইকেলে পরপর কয়েকদিন ট্রাই করলে আমার মনে হয় ও প্রেগন্যান্ট হয়ে যাবে ।
– আপনি সত্যি এই ভাবে এগোতে চান ব্যাপারটা ? আমার বিশ্বাস হচ্ছে না!
– আমি ভাবনা চিন্তা করেই বলছি আপনাকে । সব কিছু গোপন ভাবে করতে গেলে এটাই আমার কাছে বেস্ট অপশান ।
– আর আপনার স্ত্রী ? ওনার কি মতামত এই ব্যাপারে ?
– ওর ইচ্ছে নেই বুঝতেই পারছেন , কিন্তু আমি ওকে বলেছি এটাই একমাত্র উপায় । ওর দিকটা আপনাকে ভাবতে হবে না। আপনি আপনার কাজ করবেন বাকি আমি বুঝে নেব। আর একটা কথা , পেমেন্ট আগের মতই ক্যাশ-এ হবে । ওটাই সেফ । তবে এবার কিন্তু খাম-এ হবে না । ব্যাগে করে পেমেন্ট নিয়ে যাবেন । অর্ধেক টাকা শুরুতে পাবেন আর প্রেগ্নেন্সি কনফারম হলে বাকিটা ।
– কত পাবো আমি এই পুরো ব্যাপারটার জন্য ?
লোকটা যে অ্যামাউন্টটা বলল সেটা আমার মাইনের হিসেবে এক বছরের রোজগারের থেকেও বেশি ! আমি সব শুনেও যেন বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে আমি একটা অচেনা অজানা লোকের স্ত্রীর সঙ্গে শোব আর তার জন্য সে-ই আমায় টাকা দেবে !
তাও আবার যে সে লোক নয় সেলিব্রিটি গোছের কেউ!
বার কয়েক চিমটি কেটে দেখে নিলাম ! নাহ , স্বপ্ন নয় ! আবার মেল এলো।
– ডেটটা আমি আমার স্ত্রীর সাথে কথা বলে আপনাকে জানিয়ে দেব। সেদিন টাকা হাতে যে লোকটিকে পাঠিয়েছিলাম সে গিয়ে আপনাকে পিক আপ করবে । গড়িয়াহাট এই তো ?
– হ্যাঁ ওখানেই ঠিক আছে । কোথায় যেতে হবে ?
– – সেটা জানাব না । তাহলে আপনি আমার পরিচয় বুঝে যাবেন । নিশ্চিন্তে থাকুন আপনার কোনও ক্ষতি হবে না। শুধু দিন সাতেক থাকতে হবে। এই কদিন বাইরের কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন না । সাত দিনের মাথায় প্রথম ভাগের পেমেন্ট পাবেন আর প্রেগ্নেন্সি কনফারম হলে বাকিটা । চিন্তা করবেন না, সব ঠিক মত হলে আপনার টাকা আমি মেরে দেব না , সময় মত সব পেয়ে যাবেন ।
– – ঠিক আছে , কয়েকদিন আগে কনফার্ম করবেন ।অফিসে ছুটি নিতে হবে আগে থেকে।
– – সাত দিন আগে জানিয়ে দেব । এখন কদিন ভালো করে খাওয়াদাওয়া করুন , শরীরের যত্ন নিন ভালো করে ।
দশ দিনের মাথায় আবার মেল এলো । পরের পুরো সপ্তাহটা ছুটি নিয়ে নিলাম আমি ।
নির্দিষ্ট দিনে সকাল ১০ টায় সেই আগের ষণ্ডা মার্কা লোকটাকে মিট করলাম । লোকটা আমায় সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে পারকিং-এ রাখা একটা সাদা হোন্ডা সিটি গাড়িতে তুলে নিল । গাড়ির ব্যাক সিটে বসার পর লোকটা আমায় একটা কালো রঙের মোটা আই-মাস্ক ধরিয়ে বলল , ‘ এটা পরে নিন ‘
– কেন আবার এটা কেন ?
– স্যার এর অর্ডার ।
আমি কথা না বাড়িয়ে আই মাস্কটা পরে নিলাম । গাড়ি ছুটে চলল অজানা গন্তব্যের পথে (চলবে)